ঢাকার প্রবেশপথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবারের সহিংসতার ঘটনায় সাতশর বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এদের মধ্যে যাদের সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাবে না, তাদেরকে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অলরেডি আমরা সাতশর বেশি মানুষকে হাতেনাতে ধরেছি। যারা আগুন ধরিয়ে দিতে গিয়েছিল, তাদেরকেও আমরা হাতেনাতে ধরেছি। এখন সব জায়গাতেই সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, আমরা সেগুলোর সাহায্য নিচ্ছি। জনগণ এ ধরনের দুষ্কৃতকারীদেরকে ধরিয়ে দিচ্ছে। অনেক সময় পুলিশের নজর এড়িয়ে গেলেও জনগণ তাদেরকে ধরে এনে আমাদের সামনে দিচ্ছে, তাদেরকেও আমরা ধরছি, কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’ সহিংসতায় যাদের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না, তাদেরকে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানালেও কতজনকে থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে, সেই সংখ্যা জানাতে পারেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
সচিবালয়ের রোববার যুক্তরাষ্ট্রের টেনেট ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা টেরি এল ইসলের নেতৃত্বে চার সদস্যের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। নির্দলীয় সরকারের দাবি তুলে সরকার পতন আন্দোলনে নামা বিএনপি শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছিল। তার পাল্টায় আওয়ামী লীগও সেসব স্থানে অবস্থানের ঘোষণা দেয়। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বিএনপিকে স্থানগুলোতে দাঁড়াতেই দেয়নি। ধোলাইখাল ও মাতুয়াইলে তাদের সঙ্গে বিএনপিকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এসময় তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
এসব ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে সাত থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিএনপির ১২২ জন কারাগারে, রিমান্ডে ২৫ : এদিকে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি থেকে সংঘাতের ১১ মামলায় বিএনপির ১২২ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ২৫ জনকে বিচারক এক দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন।
শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধোলাইখাল, মাতুয়াইল, উত্তরায় সংঘর্ষের পর এই ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংঘাতের ঘটনায় সাতটি থানায় মোট ১১টি মামলা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার এই ১৩৭ জনকে ঢাকার কয়েকটি মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে রিমান্ড ও কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয় বলে আদালত পুলিশ ও বিএনপির আইনজীবীরা জানান।