বেতন-ভাতা ও পেনশনে যাবে ৭৮ ভাগ

চবিতে ৪০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা গবেষণায় বরাদ্দ ২.১১ শতাংশ মাস্টার প্ল্যানে টিএসসি ভবনের প্রস্তাবও আছে

চবি প্রতিনিধি | সোমবার , ৩১ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩২৪ অর্থবছরের জন্য ৪০৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্তি ৩৯৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ঘাটতি বাজেট ৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে বেতনভাতা ও পেনশনে। মোট বাজেটের ৭৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে খাতে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে চবির ৩৫তম বার্ষিক সিনেট সভায় বাজেট ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ। বরাবরের মতোই ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাজেটে এবারও সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতনভাতায়। এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া পেনশন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে বেতনভাতা ও পেনশন খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা; যা মোট বাজেটের ৭৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

এবার বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ২ দশমিক ১১ শতাংশ। গত অর্থবছরে ছিল ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ৫৭ বছরেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সংকট ঘুচেনি। নানা সময়ে শিক্ষার্থীসহ অনেকেই টিএসসির দাবি তুলে আসছিল। কিন্তু হয়নি। বক্তব্যে চবি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর মেয়াদি ডিজিটাল মাস্টার প্ল্যানের সংক্ষিপ্ত বিবরণে টিএসসির বিষয়টি তুলে ধরেন।

উপাচার্য বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর মেয়াদি ডিজিটাল মাস্টার প্ল্যানের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও একাডেমিক কর্মকাণ্ডের উৎকর্ষ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার পরিবেশগত মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে আগামী ৫ বছরে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে ‘চবির একাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং গবেষণা সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রকল্প প্রস্তাবটি ২০২৩২৪ অর্থবছরের জাতীয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্থান পেয়েছে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্প প্রস্তাবে নতুন ৩টি একাডেমিক ভবন, বিভিন্ন অনুষদের জন্য সায়েন্টিফিক রিসার্চ ল্যাব, ২য় প্রশাসনিককামসিনেট ভবন, টিএসসি ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য ২টি আবাসিক হল, ট্রান্সপোর্ট কমপ্লেঙ, সড়ক নির্মাণ, সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ কাজগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ব্যাপক একাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে।

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল নির্মাণাধীন হল খুলে দেওয়া। চবি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল আগামী ৮ আগস্ট ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন উপাচার্য। ৮ আগস্টের পর এ হলে ছাত্রীদের আসন বরাদ্দ দেয়া হবে।

২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে উদ্বোধন করা হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। উদ্বোধনের প্রায় ২ বছর হয়ে গেলেও এখনো এটি চালু হয়নি।

তবে সমাবর্তনের প্রশ্নে এড়িয়ে যান উপাচার্য। তিনি অনেকবার ৫ম সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সভায় সমাবর্তনের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

সিনেট সভায় সভাপতির বক্তব্যে চবি উপাচার্য বলেন, শিক্ষাগবেষণা খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাগবেষণা, প্রশাসনিক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে বর্তমান প্রশাসন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিরলসভাবে কাজ করছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চান।

সিনেট সভায় সংসদ সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে চলছে প্রতারণা, চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধভারত ও বাংলাদেশে ফের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় আল-কায়েদা : জাতিসংঘ