কক্সবাজারে শেষ হল রাখাইন সমপ্রদায়ের তিন মাসব্যাপী বর্ষা উৎসব। গতকাল সৈকতের শৈবাল পয়েন্ট সংলগ্ন ঝাউবাগানে দিনব্যাপী উৎসবে চলে আড্ডা, গানসহ নানা আয়োজন।
দুপুরে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, একপাশে উপচে পড়ছে সাগরের উত্তাল ঢেউ, অন্য পাশে সবুজ ঝাউবন। এরই মাঝে চলছে উৎসবের আনন্দ। কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি। এই লুকোচুরির মধ্যেই চলছে রাখাইন সমপ্রদায়ের বর্ষা আনন্দ। দিনভর আনন্দ উল্লাসের পর সন্ধ্যায় সমুদ্রস্নান শেষে উৎসবের ইতি টানেন হাজারো মানুষ।
জানা যায়, প্রতিবছর মে মাসে এ উৎসব শুরু হলেও এ বছর ২১ এপ্রিল এ উৎসব শুরু হয়। প্রতি বছর বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান তিন মাসব্যাপী আষাঢ়ী পূর্ণিমার আগে (আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত) আড়াই থেকে তিন মাস সৈকতে এ উৎসব পালন করে থাকে রাখাইন সমপ্রদায়। রাখাইন যুবক কেংগ্রী জানান, এটি রাখাইনদের কোনো ধর্মীয় উৎসব নয়। শুধুমাত্র সবাই মিলে–মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে মহা আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই এ উৎসব। রাখাইন তরুণ–তরুণী উসিবু, মি. ছেন, মাছানু,নিলাসহ ১৫জনের একটি দল। সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব, সংঘাত–হানাহানি ভুলে সবাই মিলে নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে সারাদিন মেতে থাকার জন্যই মূলত এ আয়োজন।
বান্দরবান থেকে আসা মাছানু রাখাইন বলেন, উৎসবে এলে একান্ত নিজের মতো সময় কাটানো যায়। পুরনো বন্ধু–বান্ধবের সঙ্গে দেখা হয়। তাই প্রতি বছর এ উৎসবে আসি শুধু মনের টানে। সবাই মিলে–মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই মূলত এখানে আসা। তিনি বলেণ, অনেকেই এটিকে বর্ষাকালীন পিকনিকও বলছে। আমি বলবো, এ উৎসবের মধ্যদিয়ে বর্ষাকে বরণ করা। রাখাইন নেত্রী মাটিন টিন জানান, ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে এ উৎসবের কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র মজা করার জন্য শতাব্দীকাল ধরে রাখাইন সমপ্রদায় এ উৎসব পালন করে আসছে। প্রথম দিকে হিমছড়ির জঙ্গলে উৎসব পালন করা হতো এবং শুধু কক্সবাজারের রাখাইন সমপ্রদায় এ উৎসব পালন করতো। গত তিন দশক ধরে সমুদ্র আর প্রকৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে কাছে পেতে সৈকতের ঝাউবাগানে পালন করা হচ্ছে মন রাঙানো এ বর্ষা উৎসব।









