সম্পত্তির ভাগ–বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে সদ্যপ্রয়াত শাশুড়ির জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়ে দাফনে বাধা দিয়েছে পুত্রবধূ। গত সোমবার বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে ঘটা এই ঘটনার একটি ভিডিও গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে লোহালিয়া গ্রামের এক নারী তার শাশুড়ির কবর দিতে বাধা দেন। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করেছে।
সদ্য প্রয়াত আনোয়ারা বেগম (৮০) ওই গ্রামের মৃত মোবারক আলী খানের স্ত্রী। এই দম্পতির পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলে আব্দুর রহিম সৌদি প্রবাসী; দাফনে বাধা দেওয়া শাহনাজ বেগম (৪৫) তার স্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
ওসি বলেন, ওই নারীর কর্মকাণ্ডে গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কবর ও প্রয়াত নারীর অবমাননা থেকে রক্ষা গৃহবধূকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। সন্ধ্যার পরে ওই নারীকে তার ভাইয়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কবরের অবমাননা না করারও মুচলেকা রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারীর প্রতিবেশী জানান, জমির ভাগ–বাটোয়ারা নিয়ে শাশুড়ি ও ননদদের সঙ্গে পুত্রবধূ শাহনাজের বিরোধ রয়েছে। শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম মারা যাওয়ার আগে তার দাফনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মৃত্যুর পর সেখানে তাকে দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হয়। কিন্তু ওই জমি দাবি করে পুত্রবধূ শাহনাজ শ্বশুরের কবরের পাশে শাশুড়িকে দাফন করতে বলেন। কিন্তু ননদরা মায়ের অসিয়ত করা স্থানেই দাফন হবে বলে জানান। এ নিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে শাহনাজ সদ্যখোঁড়া কবরে শুয়ে পড়ে দাফনে বাধা দেন।
এদিকে ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, সেখানে জড়ো হওয়া গ্রামবাসীরা বলছে, আপন শাশুড়ি। এমন কাজ কি কেউ করে। তখন একজন তাকে বলছে, আপনি কাহজে না পাইলে কি করবেন। আপনি কি কবরে শুয়ে জাগা (জমি) নেবেন। আপনি না পেলে কেমনে নেবেন। সবই এক জায়গা দিয়ে নেবেন। এ সময় কেউ কেউ ক্ষোভে কবরে শুয়ে পড়া ওই নারীকে মাটি চাপা দেওয়ার কথাও বলতে শোনা যায়।