কেবল নিজের নয়, দেশের উন্নতির জন্য কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তাহলেই সবাই মিলে ভালো থাকা যাবে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ‘অধ্যক্ষ সম্মিলন ও বৃত্তি প্রদান–২০২৩’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে, তার উপযুক্ত জনশক্তি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।
২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট দেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সেই দেশের কারিগর হিসেবে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে গড়ে তুলবে সেটাই আমি আশা করি। খবর বিডিনিউজের।
কেবল নিজের জন্য কাজ করলে ‘ভালো থাকা যায় না’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে, দেশের মানুষের প্রতি একটা কর্তব্যবোধ থাকতে হবে। শুধু নিজেকে নিয়ে না থেকে… দেশের মানুষ সার্বিকভাবে যত উন্নত হবে নিজের জীবনটাও উন্নত হবে। আসুন সকলে মিলে আমরা আমাদের দেশটাকে আরো উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলি।
তরুণদেরকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩৯টা হাইটেক পার্ক, কম্পিউটার এবং ইনকিউবেশন সেন্টার করে সেখানে ট্রেনিং দিচ্ছি। ন্যানোটেকনোলজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সব বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি। ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি। সেখানে কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের লোক দরকার। সেখানে পরিচালনা থেকে শুরু করে শ্রমিক, সব ক্ষেত্রেই আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার। আন্তর্জাতিকভাবেও বহু দেশ দক্ষ জনশক্তি চায়। সেভাবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের শিক্ষার্থীদের আরও যত্ন করে এসব বিষয়ে শিক্ষা দেবেন যেন তারা স্বাধীন বাংলাদেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। আজকের দিনের এই প্রজন্ম, তারাই তো আগামী দিনের রাষ্ট্রের কর্ণধার হবে। আমাদের আর কতদিন, বয়োবৃদ্ধ হচ্ছি, কাজে কবে আছে কবে নাই। তারপরেও বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আঁশ’ কাজ করে যাব–এটাই হচ্ছে কথা।
অনুষ্ঠানে ১০ জন অসচ্ছল মেধাবী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এবার ১১ হাজার ২৮৫ জন অসচ্ছল মেধাবী এবং ১ হাজার ১০৯ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মিলিয়ে মোট ১২ হাজার ৩৯৪ জন শিক্ষার্থী প্রায় ৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার বৃত্তি পেয়েছে। এ অনুষ্ঠান থেকে আইসিটি মাস্টারপ্যানসহ প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।