১১ লাখ টন চাল ও গম আমদানি করবে সরকার

ব্যয় হবে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ।। টেন্ডারের পর দরপত্র দাখিলের সময়সীমা কমল, দরপত্র চলতি সপ্তাহে

হাসান আকবর | সোমবার , ১৭ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

দেশে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার ১১ লাখ টন চাল ও গম আমদানি করছে। এর মধ্যে ৫ লাখ টন চাল ও ৬ লাখ টন গম জিটুজি এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এই চাল ও গম আমদানি করতে সরকারের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।

সূত্রে জানা যায়, দেশে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী সরকারের গুদামে ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৯০৪ টন চাল, ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫২ টন গম এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯৬ টন ধান মিলে মোট ১৯ লাখ ৭ হাজার ৮৮৮ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।

মজুদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং তা দেশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট বলে উল্লেখ করে খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে বলেন, তবে বাজার পরিস্থিতি যাতে অস্থিতিশীল না হয় সেজন্য সরকার সবসময় গুদামে বাড়তি মজুদ রাখে। শুধু বাজার পরিস্থিতি নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেও এই বাড়তি মজুদ জরুরি। বিষয়টি মাথায় রেখে খাদ্য মন্ত্রণালয় ৫ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে ৩ লাখ টন এবং বিদেশি সরবরাহকারীর কাছ থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বাকি ২ লাখ টন চাল আমদানি করবে। তবে দরপত্রে যদি সরকারের কাছ থেকে বেসরকারি সরবরাহকারীর কাছে দর কম পাওয়া যায় তাহলে সরকার বেসরকারি খাত থেকেই চাল আমদানি করবে। যদি বেসরকারি খাতের চেয়ে সরকারি খাতে কমে পাওয়া যায় তাহলে জিটুজি ভিত্তিতেই পুরো চাল আমদানি করা হবে।

একইভাবে সরকার ৬ লাখ টন গম আমদানি করবে। প্রাথমিকভাবে সরকারিভাবে জিটুজি ভিত্তিতে সাড়ে ৪ লাখ টন এবং বেসরকারি সরবরাহকারীর কাছ থেকে দেড় লাখ টন গম আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে দরের পার্থক্য হলে সরকার এক্ষেত্রেও নতুন করে চিন্তাভাবনা করবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাদ্য অধিদপ্তরকে চাল ও গম আমদানির উদ্যোগ নেয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে দরপত্র দাখিলের সময়সীমার মাঝেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে টেন্ডার আহ্বানের পর দরপত্র দাখিলের সময়সীমা ৪২ দিন ছিল। এখন তা কমিয়ে ১৫ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পত্রিকায় টেন্ডার আহ্বানের দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দরপত্র দাখিল করতে হবে। চাল ও গম আমদানি প্রক্রিয়া গতিশীল করতেই নতুন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে খাদ্যশস্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলারের মধ্যে গম এবং ৫০০ থেকে ৫৫০ ডলারের মধ্যে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি করা যাবে। এতে সরকারের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে চাল আমদানিতে ৩ হাজার ১শ কোটি টাকা এবং গম আমদানিতে ২ হাজার ৪শ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে বলেন, আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। তুলনামূলক কমে যেখানে চালগম পাওয়া যাবে সেখান থেকে তা কেনা হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে আমরা দরপত্র আহ্বান করব। চাল ও গম রপ্তানিকারক দেশের সরকার এবং সরবরাহকারীদের সাড়ার ওপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরতনপুর গ্রুপের মালিক, ২ ছেলেসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পরবর্তী নিবন্ধদোহাজারী পৌরসভার প্রথম নির্বাচন আজ