খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে অপর্যাপ্ত রেশন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্মহীন জেলেরা। প্রজনন মৌসুমে কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ও দীঘিনালার প্রায় চার হাজারের বেশি জেলে। এসময় প্রতি মাসে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। জেলেরা এ বরাদ্দ অপর্যাপ্ত দাবি করে বলেন, ২০ কেজি চাল দিয়ে পাঁচ দিনের বেশি চলে না। চাল পেলেও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
মহালছড়ির মৎস্যজীবী ফুল চান জানান, আমাদের পরিবারের সদস্য ৬ জন। সরকার ২০ কেজি চাল দেয়। এটা দিয়ে আমাদের ৪–৫ দিন কোনোমতে চলে। মাসের বাকি দিনগুলি খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। এটা দিয়ে কোনোভাবেই সংসার চলে না। তিনি দাবি করেন, লেকে মাছ ধরে না এমন অনেকে সরকারি চাল পায়। তাদের কার্ডগুলো বাদ করে আমাদের চাল আরেকটু বাড়িয়ে দিলে বড় বেশি উপকৃত হত প্রকৃত জেলেরা।
মহালছড়ির আরেক মৎস্যজীবী আল আমিন বলেন, আমি মাছ ধরেই সংসার চালাই। অথচ আমি রেশন পাই না। তালিকায় আমার নাম নেই। অথচ জেলে নয় এমন অনেকের নাম তালিকায় রয়েছে।
সরকারিভাবে রেশনিংয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে মৎস্যজীবী নেতা মো. আবুল খায়ের বলেন, বছরে মে থেকে জুলাই তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এই সময়টাতে জেলেরা খুব কষ্টে থাকে। সরকার যদি আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করে তাহলে তারা কোনোরকমে বেঁচে থাকতে পারবে।
জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল অপ্রতুল স্বীকার করেছে স্থানীয় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন। বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়ে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র, মহালছড়ির উপকেন্দ্র প্রধান মো. নাসরুল্লাহ বলেন, জেলেদের পরিবার প্রতি ২০ কেজি চাল বরাদ্দ আমাদের কাছে অপ্রতুল মনে হয়েছে। তাদের বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০ কেজির পরিবর্তে ৩০ কেজি করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া মৎস্যজীবীদের তালিকা সংশোধনের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।