ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের মধ্যে বিএনপির নতুন কর্মসূচি চূড়ান্ত করার ঘোষণা কেবল ‘শক্তি প্রদর্শন এবং বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণের’ চেষ্টা বলে মনে করছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বিদেশিরা বিএনপির শক্তি সামর্থ্য নিয়ে ‘সন্দিহান’ বলেই দলটি এ কাজ করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল এখন দেশে অবস্থান করছে। এই সময় তারা (বিএনপি) এ ধরনের কর্মসূচির কথা বলার অর্থ হচ্ছে, তারা আসলে এই কর্মসূচিগুলো জনগণকে দেখাতে চায় না, বিদেশিদের দেখাতে চায়। বিদেশিরা তাদের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান তো, তাদের একটু শক্তি দেখানোর জন্য তারা চেষ্টা করছে মাত্র। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমিয়ের সময়ে হাছান মাহমুদ বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপির কোনো অভিযোগ থাকলে তা জনগণের কাছে তুলে ধরা উচিত মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের সমস্ত কর্মসূচি, সমস্ত কথাবার্তা বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টাপ্রসূত। যেটি কোনো রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে বৈঠক করে চলমান আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার আলাদা আলাদা সমাবেশ থেকে সেই নতুন ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নতুন করে ‘এক দফার আন্দোলনের’ বিষয়টি সরকারের কাছে ‘খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না’। কাউকে দেশে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করার সুযোগ সরকার দেবে না। আমরা অতীতেও দেখেছি, বিএনপি যখনই কর্মসূচি ঘোষণা করে, তারা একটি বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, জনজীবনে ভোগান্তি ঘটায় এবং দেশে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারই তাদের মূল উদ্দেশ্য, সেই সুযোগ আমরা দেব না।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ফখরুলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমি সে প্রশ্ন রাখতে চাই? মুক্তিযুদ্ধের পরে তো তিনি বাবাসহ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। উনিতো মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল। যে দলের মহাসচিব ‘পাকিস্তানই ভালো ছিল’ বলে, সেই দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা–সার্বোভৌমত্বে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ তার দল তাকে শোকজ করেনি বা স্বপদ থেকে বাদ দেয়নি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল নিয়ে এক প্রশ্নে হাছান বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনই বলছে আরপিও সংশোধনের যে প্রস্তাব দিয়েছিল, সেটি সংসদে যেভাবে পাস হয়েছে সেভাবে তারা সন্তুষ্ট। তারা যখন সন্তোষ প্রকাশ করে সেখানে আমাদের বলার কোনো কিছু নেই। আমরাও তাদের সাথে সহমত পোষণ করি। নির্বাচন কমিশন বর্তমানে যে ‘শক্তিশালী অবস্থানে’ আছে, সেই অবস্থানে থেকে তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক সংসদ নির্বাচন করতে পারবে বলেও প্রত্যাশা তথ্যমন্ত্রীর।