বিএনপি চট্টগ্রাম থেকে ‘সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের’ যে ঘোষণা দিয়েছে, তার ‘মৃত্যু’ চট্টগ্রামেই হয় কি না তা দেখতে বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে’ চট্টগ্রামে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নিহত হওয়ার ঘটনাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চট্টগ্রাম থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু করবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কিন্তু চট্টগ্রামে নিহত হয়েছিলেন, তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। চট্টগ্রাম থেকে (আন্দোলন) শুরু করা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এক দফার আন্দোলন তো তারা মাঝেমধ্যে ঘোষণা দেন। এক দফার আন্দোলন চট্টগ্রামে মারা যায় কিনা, সেটি দেখার বিষয়।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিফলন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি চট্টগ্রাম থেকে ‘সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন’ শুরু করবে বলে আগের দিন ঘোষণা দেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
নোমানের ওই বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা হাছান মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কোনো চাপে নেই।
২০১৩–২০১৪ সালে যে আন্দোলন ও সহিংসতা তারা (বিএনপি–জামায়াত) করেছে আমরা তা সামাল দিয়েছি। সেটি করার সামর্থ্য এখন বিএনপির নেই এবং ভূ–রাজনীতির কারণে সেই ধরনের আন্দোলন করা এবং সেই ধরনের ঘটনাপ্রবাহ ঘটানো তাদের পক্ষে সম্ভভপর নয়। আমরা জানি কখন কী করতে হবে। সুতরাং আমরা কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছি না। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের প্রত্যাশা রেখে সরকারের এই মন্ত্রী বলেছেন, কিছুদিন আগে পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও জনগণের কাছে ভোট বর্জনের আহ্বান রেখেছিল বিএনপি। এত প্রচারণা–আহ্বানের মধ্যেও সেখানে গড়ে ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণকে ‘গণতন্ত্রণের মূল বিষয়’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে স্বাগত জানান। তবে বিএনপি না এলেও জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা রাখেন।
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ‘বিদেশিদের হাতে পায়ে না ধরে’ জনগণের কাছে নালিশ করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনগণ হচ্ছে দেশের মালিক। দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় কারা যাবে সেটি নির্ধারণ করার মালিক হচ্ছে জনগণ। বিএনপির যদি কোনো নালিশ থাকে সেই নালিশ দিতে হবে জনগণের কাছে। সেই নালিশ বিদেশিদের কাছে নয়। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব বিদেশিদের হাত পায়ে না ধরার জন্য, নালিশ জনগণের কাছে করার জন্য।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ওই বৈঠকে নির্বাচন নিয়েও কথাবার্তা হয় বলে ফখরুল জানান। ওই প্রসঙ্গ ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে। সেখানে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বে থাকে, আমাদের দেশেও ঠিক একইভাবে নির্বাচন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত সম্পর্ক রয়েছে, দেশটি বাংলাদেশের উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে। তাদের এই আগমনে আমরা স্বাগত জানাই। তাদের এই আগমন তাদের সাথে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তাই বহন করে।