পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত

হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকা এবং ত্যাগের মহিমা ধারণ করার আহ্বান

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ জুলাই, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদুল আজহা গত বৃহস্পতিবার উদযাপিত হয়েছে। ত্যাগের মহিমাকে ধারণ করে নামাজ শেষে এদিন চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কোরবানি দেন। একইসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশনা মেনে দরিদ্র ও কোরবানি করতে অক্ষম লোকজনের মাঝে জবাইকৃত পশুর মাংস বিলি করে ভাগাভাগি করে নেন ঈদ আনন্দ। সব মিলিয়ে ঈদ আয়োজনের প্রতিটি মুহূর্ত উৎসাহ উদ্দীপনায় ও আনন্দ উচ্ছাসে পার করেন চট্টগ্রামবাসী।

ঈদের দিন মূল কার্যক্রম শুরু হয় জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে। ধনীগরিব সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে ঈদগাঁহ ও মসজিদে মসজিদে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মানুষের সুস্থতা কামনা করা হয় মোনাজাতে। এর আগে খুতবায় হিংসাবিদ্বেষ থেকে দূরে থেকে সবাইকে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও মমতার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

নগরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ব্যবস্থাপনায় সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে। এছাড়া একই মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান জামাতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির ব্যবস্থাপনায় প্রধান ঈদ জামাত স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বায়তুশ শরফ আদর্শ সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা ড. সাইয়েদ আবু নোমান।

রাজধানীতে ঈদের বৃষ্টি হলেও চট্টগ্রামে হয়নি। ফলে কোনো ধরনের দুর্ভোগ ছাড়াই রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে সবাই অংশ নেন ঈদ জামাতে। ঈদের নামাজ উপলক্ষে মসজিদ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। মসজিদ ও এর আশেপাশে সতর্ক অবস্থায় ছিলেন পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ফলে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে এক কাতারে শামিল হন। এখানে প্রথম জামাতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার সোলায়মান শেঠসহ বিশিষ্টজনরা অংশ নেন। তারা নগরবাসীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচন বর্তমান পদ্ধতি অনুযায়ী হবে এবং সবাইকে সাথে নিয়েই হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরেই শুধু রাজনীতি নয়। রাজনীতি মানুষের জন্য, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। আমরা নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতি করি না।

মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, চারদিকে বিশৃঙ্খলা, মানুষ দিশেহারা। তার মধ্যেও মানুষ ঈদ করছে। নির্বাচন নিয়ে মানুষ শঙ্কিত। কারণ আওয়ামী লীগের ভাষা যুদ্ধংদেহী। মেরে ফেলব, কেটে ফেলব, এটা করব, ওটা করব নাএ রকম। এটা রাজনীতির ভাষা না। রাজনীতির ভাষায় তাদের ফিরে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, জমিয়তুল ফালাহ ছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৮টি মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদগুলো হচ্ছে লালদীঘি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শাহী মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ (.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি কর্পোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুর বাজার জামে মসজিদ ও মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন)। পাশাপাশি চসিকের ৪১টি ওয়ার্ডে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রতিশোধ নিলে বিএনপি-জামায়াতের অস্তিত্বই থাকত না : শেখ হাসিনা
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে এক গ্রামেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন শতাধিক মানুষ