৬ মাস শূন্য থাকা করোনা ব্লকে ফের রোগী

রতন বড়ুয়া | সোমবার , ২৬ জুন, ২০২৩ at ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

৬ মাস শূন্য থাকার পর পুনরায় রোগী ভর্তি হতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনা ব্লকে (কোভিড ওয়ার্ড)। গত ১৯ জুন থেকে এ পর্যন্ত তিনজন রোগী করোনা ব্লকে ভর্তি হয়েছে। এর মাঝে ৯ মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে। চিকিৎসার পর করোনা নেগেটিভ আসায় এরই মাঝে দুই রোগীকে কোভিড ওয়ার্ড থেকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। তবে ৯ মাসের শিশুটি এখনো ওখানে চিকিৎসাধীন। চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাজিব পালিত এসব তথ্য আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুন করোনা আক্রান্ত ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ প্রথমে ওয়ার্ডে ভর্তি হন। কোভিড নেগেটিভ হওয়ার পর গতকাল সকালে ওই রোগীকে রিলিজ দেয়া হয়। তবে কিডনিজনিত জটিলতা থাকায় ওই রোগীকে অন্য ব্লকে স্থানান্তর করা হয়েছে। ২০ জুন দ্বিতীয় রোগী হিসেবে কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি হন ৫৫ বছরের এক নারী। কোভিড নেগেটিভ হওয়ায় ২৩ জুন তিনি ওয়ার্ড থেকে রিলিজ পেয়েছেন। কোভিড ওয়ার্ডে তৃতীয় রোগী ভর্তি হয় ২২ জুন। কোভিডজনিত শ্বাসকষ্টের জটিলতা নিয়ে ৯ মাস বয়সী ওই শিশু রোগীকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে তাকে অঙিজেন সাপোর্ট দিতে হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় শনিবার রাতে তার অঙিজেন সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হলেও এখনো ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ শফিকুর নুর।

তিনি আজাদীকে বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি কোভিড ওয়ার্ড থেকে একজন রোগী রিলিজ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে ওয়ার্ড রোগীশূন্য ছিল। ৬ মাস আমরা কোনো রোগী পাইনি। তবে এখন আবারো রোগী আসতে শুরু করেছে। ১৯ জুন প্রথম একজন ভর্তি হন। পরে আরো দুজন ভর্তি হয়েছেন। এর মাঝে ৯ মাসের একটি শিশু রয়েছে। শিশুটি এখনো চিকিৎসাধীন। যদিও তার শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে।

হঠাৎ করে কোভিড রোগী ভর্তির বিষয়টি চিন্তায় ফেলেছে হাসপাতাল প্রশাসনকে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলছেন, এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে। রোগীও ভর্তি হচ্ছে। এর মাঝে হঠাৎ কোভিড রোগী আসা শুরু হয়েছে। এটা চিন্তার বিষয়।

দীর্ঘ সময় রোগী না থাকায় কোভিড ওয়ার্ড অনেকটা সংকুচিত করে ফেলা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, রোগী না থাকায় আমরা একশ শয্যার কোভিড ওয়ার্ডটি ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলেছি। ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকায় কোভিড ওয়ার্ডেই আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার বিষয়ে ভাবছিলাম। কিন্তু এখন আবার কোভিড রোগী আসা শুরু করায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। কারণ কোভিড রোগীদের আলাদা করে চিকিৎসা না দিয়ে উপায় নেই।

এই সময়ে এসে আবারো কোভিড রোগী পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি আজাদীকে বলেন, অনেকেই কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা চেম্বারেও কোভিড রোগী পাচ্ছি।

হঠাৎ এই প্রকোপ করোনার নতুন ঢেউয়ের আভাস বলে শঙ্কার কথা বলছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এমন শঙ্কা প্রকাশ করে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ছে ৫ শতাংশ
পরবর্তী নিবন্ধশাটল ট্রেনের ধাক্কায় নানি-নাতির মৃত্যু