টাইটান ডুবোযান উদ্ধারে যেসব বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে

| বৃহস্পতিবার , ২২ জুন, ২০২৩ at ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ

 

আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে পড়ে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পর্যটকদের নিয়ে যেত যে ডুবোযানটি সেটি পাঁচ আরোহীসহ তিন দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এই পাঁচ আরোহীর মধ্যে একজন পাইলট ও অপর চারজন যাত্রী। এই যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশপাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ, ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং এবং ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি পল হেনরি নারজুলেত। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। পর্যটন সংস্থা ওশেনগেইট টাইটানিকের ওই ধ্বংসাবশেষ দেখাতে নিয়ে যায় পর্যটকদের। এজন্য ওশেনগেইট ব্যবহার করে কার্বনফাইবারের তৈরি ২২ ফুট লম্বা প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কেজি ভরের একটি ডুবোযান, যার নাম টাইটান। এটি সাগরতলের ৪০০০ মিটার (১৩১২৩ ফুট) পর্যন্ত গভীরে যেতে সক্ষম। খবর বিডিনিউজের।

পাঁচ আরোহীসহ এই টাইটানকে উদ্ধারের চেষ্টায় উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ২০০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে নিবিড় তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। এ অভিযান চালাতে গিয়ে উদ্ধারকর্মীদের যেসব বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তা তুলে ধরা হলো। ওশেনগেইট জানিয়েছে, ডুবোযানটিতে থাকা অক্সিজেন আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এরপর আরোহীদের নিশ্বাস নেওয়ার মতো আর কোনো অক্সিজেন যানটিতে থাকবে না।

মহাসাগরের বন্ধুর তলদেশ : যদি ডুবোযান টাইটান মহাসাগরের তলদেশে গিয়ে পড়ে থাকে তাহলে এর উদ্ধারের সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আড়াই মাইল গভীরে। এই দূরত্বের অর্ধেক যাওয়ার পর টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা নিয়ন্ত্রণ জাহাজ পোলার প্রিন্সের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটা তুলে নিয়ে আসবেন? : ডুবোযানটি যদি মহাসাগরের তলদেশে চলে যায় তাহলে আরেকটি ডুবোযান দিয়ে সেটিকে তুলে নিয়ে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের গভীরতায় পৌঁছানোর মতো শুধু হাতেগোনো কয়েকটি ডুবোযান আছে। যদি সেগুলোর কোনোটি নিচে পড়ে থাকা নিখোঁজ ডুবোযানটির কাছে পৌঁছায়ও সেটিকে টেনে তুলতে পারবে না, কারণ এ ধরনের কোনো ডুবোযানেরই টাইটানকে টেনে উপরে তুলে নিয়ে আসার মতো শক্তি নেই।

এটি যদি মহাসাগরে ভেসে ওঠে : ডুবোযানটি মহাসাগরে উপরে ভেসে উঠে যদি একবার ডুবতে থাকে আবার ভেসে উঠতে থাকে তবে সেটি খড়ের গাদায় সুই খোঁজার মতো পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। একটি ট্রাকের সমান আকারের এই যানটি যদি আংশিক ডুবে থাকে তবে এটি খুঁজে পাওয়া আরও কঠিন হবে।

রেডিও ও জিপিএস সিগন্যাল : রেডিও বা জিপিএস সিগন্যালের তরঙ্গ পানির মধ্য দিয়ে চলতে পারে না, তাই ডুবোযানটি যদি পানির নিচে থাকে তাহলে এগুলো কোনো কাজে আসবে না। পানির মধ্য দিয়ে শব্দ খুব দ্রুত যায়, প্রতি সেকেন্ডে ১৫০০ মিটার। তাই উদ্ধারকর্মীরা পানিতে সোনার লাগানো বয়া ফেলে নিখোঁজ টাইটানকে থেকে আসা সম্ভাব্য শব্দ শনাক্ত করে সেটির অবস্থান নির্ণয়ের চেষ্টা করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতে শীঘ্রই আসবে টেসলা
পরবর্তী নিবন্ধপশ্চিম তীরে গুলিতে চার ইসরায়েলি নিহত