গত ১১ জুন আমার পরিচিত এক আত্মীয়কে চোখের অপারেশন করাতে চট্টগ্রামের একটি চক্ষু হাসপাতালে যায়। সেখানে গিয়ে নাছির উদ্দিন নামে এক ভাইয়ের সাথে দেখা। কথা বলতে বলতে উনি জানায় উনার চোখে অপারেশন করাতে হবে। জনাব নাছির উদ্দিন ট্রেনে যাতায়াত করেন। প্রতিদিনের মত চট্টগ্রাম শহর থেকে চাকরি শেষে সরকারহাটস্থ গ্রামে ফিরছিলেন। মাঝপথে হঠাৎ কারও ছোড়া ঢিল এসে পড়ে জনাব নাছিরের চোখে। রক্তাক্ত হলো নাছির। পাথরের আগাতের কারণে উনার ডানচোখে দৃষ্টি শক্তি হারায়। ডা: জানাল অপারেশন লাগবে। অপারেশনের পর চোখে দেখতেও পারে, আবার নাও দেখতে পারে। তবে অপারেশন অবশ্যই করাতে হবে।
ট্রেন যাত্রা আমরা সব সময় নিরাপদ মনে করি। কিন্তু কোথায় আমরা নিরাপদ। ধারাবাহিকভাবে ঘটছে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ। প্রয়োজনে–অপ্রয়োজনে যেখানে–সেখানে পাথর ছোড়া এখন একটি স্বভাবে পরিণত হয়েছে। হাতের কাছে ঢিল পেলেই হলো, তা ছুড়ে নিজের হাতের শক্তি যাচাই করতেই হবে। এতে কারও ক্ষতি হলে হোক, কারও চোখ নষ্ট হলে হোক আর ট্রেনের কাচ ভাঙলে ভাঙুক। ঢিল প্রদানকারীর কিছু যায় আসে না। ছোটবেলায় আমরা অনেকেই মৌমাছির চাকে ঢিল ছুড়েছি। তারপর মৌমাছি পিছু নিয়েছে। কেউ বেঁচেছে আবার কেউ মৌমাছির হুল খেয়েছে। মৌমাছি নেই কিন্তু সেই ঢিল ছোড়ার অভ্যাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে চলেছে।
ট্রেনে মজা করে পাথর ছোড়ার কারণে এরকম নাছির উদ্দিনের মত অনেক সুস্থ মানুষ চোখের দৃষ্টি শক্তি হারাচ্ছে, অনেকের মাথায় পাথর পড়ে রক্তাক্ত হচ্ছে, ট্রেনের গ্লাস ভাঙছে। মানুষের জানমাল এবং দেশের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যদি একটু সচেতন হয় তাহলেই রক্ষা পাবে জাতীয় সম্পদ, নিরাপদ হবে ট্রেন যাত্রা।