২০১৮ সালে টেস্ট মর্যাদা লাভের পর আফগানিস্তান প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিল ভারতের বিপক্ষে। অভিষেক টেস্টে একেবারে নাস্তানাবুদ আফগানরা। তবে পরের বছর নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে জয়ের খাতা খোলে আফগানরা। তবে টেস্ট পরিবারের নবীনতম সদস্য আফগানিস্তান সবচাইতে বড় চমকটি দেখায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়ে।
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বৃষ্টি বিঘ্নিত সে ম্যাচে বাংলাদেশকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিল রশিদ খানের দল। সে ম্যাচে আফগানদের জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রশিদ খান। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পর আবার আফগানদের সামনে বাংলাদেশ। তবে এবারে নেই সেই রশিদ খান। অপরদিকে বাংলাদেশ দলে নেই দুই সেরা তারকা তামিম এবং সাকিব। দুজনই ইনজুরিতে। তাই বাংলাদেশের যেমন প্রতিশোধের মিশন তেমনি আফগানদের মিশন এগিয়ে যাওয়ার। তবে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে আজ মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে সবশেষ এক টেস্টের সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে জয় পেলে দুটি লক্ষ্য অর্জিত হবে বাংলাদেশের। ২০১৮ সালের পর আবারও টানা দুই টেস্ট জয়ের স্বাদ যেমন নিবে টাইগাররা তেমনি আফগানদের উপর প্রতিশোধটাও নেওয়া হয়ে যাবে। ঘরের মাঠে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২–০ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এ বছরের শুরু দিকে টেস্ট ম্যাচ খেললেও আফগানিস্তান তাদের শেষ টেস্ট খেলেছিল ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সে হিসেবে দুই বছর পর আবারও টেস্ট খেলতে নামবে আফগানরা। যদিও বলা হচ্ছে এই ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ ফেবারিট। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা টাইগারদের জন্য সুখকর নয়। তবে বাংলাদেশ সাড়ে তিন বছর আগের সেই স্মৃতি ভুলে যেতে চায়। একেবারে নতুনভাবেই যেন শুরু করতে চায় টাইগাররা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের জন্য স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করেছে বাংলাদেশ। দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছেন গরমের কারণে শেষের দিকে উইকেট খারাপ হলে স্পিনাররা সুবিধা পাবে। তার মতে স্পোর্টিং উইকেট সবাইকে সহায়তা করবে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে ধরনের উইকেট ব্যবহার করা হয়েছিল এটিও একই ধরনের। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে ঘাস সবুজ হয়ে গেছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সবুজ উইকেটে খেলেছিল বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমাদের পেস বোলার আছে। তাদের এমন একটি কন্ডিশন আমাদের দিতে হবে যা তাদের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে। পাশাপাশি আমাদের ভালো স্পিনারও আছে। আমি মনে করি ব্যাটার, পেস বোলার এবং স্পিনার সবার জন্য এটি একটি ভালো স্পোর্টিং উইকেট। আমি একটি ভালো লড়াই দেখতে চাই।
এই ম্যাচে সাকিবের অভাব অনুভব করবে বাংলাদেশ। অলরাউন্ডার হবার কারণে অতিরিক্ত বোলার এবং অতিরিক্ত ব্যাটার হিসেবে খেলে দলকে বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকেন সাকিব। ওপেনার তামিম ইকবালও নেই দলে। পেসার তাসকিন আহমেদের ফিটনেস নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তারপরও লড়াইটা চালানোর মত রসদ রয়েছে বাংলাদেশ দলে। তেমনটি জানালেন দলে অধিনায়ক লিটন দাশও। তবে সে ধরনের কোনো কিছু ভাবতে চাননা আফগানিস্তান অধিনায়ক হাসমউল্লাহ শহীদি।
তিনি কেবলই ইতিবাচ ক্রিকেট খেলতে চান। তবে ভুলে যেতে চান না ২০১৯ সালের টেস্টের স্মৃতি। সেদিনের সে জয়টি করছে আফগানদের। দলের সেরা স্পিনার রশিদ না থাকায় কোন চাপ অনুভব করছেন না শহীদি। তিনি বলেন, রশিদ আমাদের দলের অন্যতম প্রধান বোলার। অতীতের টেস্ট ম্যাচগুলোতে খুব ভালো করেছে সে। তবে তার বিকল্প এখন আছে আমাদের। আমি বিশ্বাস করি তারা ভালো পারফর্ম করবে। ২০১৮ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার পর থেকে ছয় টেস্ট খেলে ৩ টিতে জিতেছে আফগানিস্তান। আয়ারল্যান্ড, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি জয়ের স্বাদ পায় আফগানরা। অপরদিকে বাংলাদেশ ১৩৭ টেস্টে জিতেছে মাত্র ১৭টি। তাই বাংলাদেশ চাইবে ১৮ তম জয় তুলে নিতে। আর আফগানদের লক্ষ্য চতুর্থ জয়। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। দেখা যাবে জিটিভি এবং টি স্পোর্টসে।