শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার শ্রম আদালত–৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল এ আদেশ দেন। অন্য তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান এবং পরিচালক নূর জাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
এদিন সকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে হাজির হন। আদেশের পর দুপুরে তিনি আদালত থেকে বেরিয়ে যান। আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন ও আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ। আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতের আদেশের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়। একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিকদের স্থায়ী করেনি। দ্বিতীয় অভিযোগ হলো গ্রামীণ টেলিকম তাদের অর্জিত ছুটি প্রদান করেনি। তৃতীয় অভিযোগ হলো নিট মুনাফার ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেয়া হয়নি। এই তিনটি অভিযোগের বিপরীতে আমরা অব্যাহতি আবেদন দিয়েছিলাম। খবর বাসসের।
গত ৮ মে শ্রম আইন লক্সঘনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাই কোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মামলা বাতিলের বিষয়ে ইউনূসের আবেদনের প্রেক্ষিতে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪–এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়।
একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছিলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলা বাতিলের বিষয়ে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়।