মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করেছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে সরকার ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করেছে।’ খবর বাসসের।
মন্ত্রী বলেন, মিঠা পানির মাছ রক্ষায় সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। মিঠা পানির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও অবাধ বিচরণের অনুপযোগী হয়ে পড়া জলাশয় সংস্কার, খনন ও পুনঃখননের মাধ্যমে আবাসস্থল পুনরুদ্ধারের লক্ষে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। বিগত ১৪ বছরে (২০০৮–০৯ হতে ২০২১–২২ অর্থবছর পর্যন্ত) মৎস্য অধিদপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ হাজার ৫শ’ ৩৮ হেক্টর অবক্ষয়িত জলাশয় পুনঃখনন করে সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে মিঠা পানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রাচুর্য সমৃদ্ধকরণ এবং প্রজাতি, বৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষে উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা অবমুক্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিগত ১৪ বছরে (২০০৮–০৯ হতে ২০২১–২২ অর্থবছর পর্যন্ত) উন্মুক্ত জলাশয়ে রাজস্ব খাতের আওতায় মোট ৪ হাজার ৫৮ মে.টন এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৫২ পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন নদ–নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে স্থাপিত ৪৩২টি মৎস্য অভয়াশ্রম সুফলভোগীদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে। মৎস্য অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে বিলুপ্ত প্রায় এবং বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির মাছের পুনরাবির্ভাব ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিঠা পানির মাছের বৃদ্ধির লক্ষে হালদা নদীর উজানে ফটিকছড়ি অংশের নাজিরহাট ব্রিজ থেকে নদীর ভাটির অংশে হালদা–কর্ণফুলীর সংযোগস্থলসহ কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার মাছের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি জানান, দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছকে রক্ষা করার লক্ষে ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়িত হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশীয় ছোট প্রজাতির মাছের প্রদর্শনী খামার স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।