বাসু চ্যাটার্জী (১৯৩০–২০২০)। চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি বাঙালি হয়েও বলিউডে একজন সফল পরিচালক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বেশ কিছু ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের জনক। তিনি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি ভারতের রাজস্থান প্রদেশের অজমের শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাসু চ্যাটার্জী মুম্বাই থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ট্যাবলয়েড ব্লিটজ–এ অঙ্কনশিল্পী এবং কার্টুনিস্ট হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বাসু ভট্টাচার্য এর কাছে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনার হাতেখড়ি। রাজ কাপুর ও ওয়াহিদা রহমান অভিনীত ‘তিসরি কসম’ চলচ্চিত্রে তিনি সহকারী হিসাবে কাজ করেন বাসু ভট্টাচার্যে সাথে। ১৯৬৬ সালে এ চলচ্চিত্রটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। বাসু চ্যাটার্জীর প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘সারা আকাশ’ (১৯৬৯)। এই ছবিটির জন্য তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারে ভূষিত হন। সত্তর ও আশির দশকে বলিউডে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন বাসু চ্যাটার্জী। তাঁর পরিচালিত ‘চিতচোর‘, ‘ছোটি সি বাত‘, ‘রজনীগন্ধা‘, ‘শৌকিন‘, ‘উসপার‘, ‘বাতোঁ বাতোঁ মেঁ‘, ‘খাট্টা–মিঠা‘, ‘পিয়া কা ঘর‘, ‘চক্রব্যুহ‘, ‘রুকা হুয়া ফৈসলা‘, ‘জীনা ইয়াহাঁ‘, ‘প্রিয়তমা‘, ‘স্বামী‘, ‘আপনে পরায়ে‘-এর মতো বহু ছবি আজও দর্শকদের মনে অমলিন হয়ে রয়েছে। ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির মধ্যদিয়ে বাসু চ্যাটার্জি ওপার বাংলা–এপার বাংলায় পরিচালক হিশেবে সিনেমা জগতের দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন পেতে নিয়েছেন। তাঁর পরিচালিত আরও কিছু মনে রাখার মতো ছবি হল ‘রত্নদীপ‘, ‘সফেদ ঝুট‘, ‘মনপসন্দ‘, ‘হামারি বহু অলকা‘ ও ‘কমলা কি মৌত‘। এছাড়া ‘হচ্ছেটা কি?’ ‘টক ঝাল মিষ্টি’ ‘চুপি চুপি’ ‘ত্রিশঙ্কু’–র মত বেশ কিছু বাংলা ছবিও পরিচালনা করেছেন বাসু চট্টোপাধ্যায়। শুধু চলচ্চিত্র পরিচালনা নয় চলচ্চিত্রে সংলাপ লিখেও তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেন। যে সব ছবিতে তিনি সংলাপ লিখেছেন তাঁর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ছবি হচ্ছে–লাখো কি বাত, হামারি বহু অলকা, দিল্লাগী, খাট্টা মিঠা, রজনীগন্ধা, পিয়া কা ঘর। সিনেমার পাশাপাশি টেলিভিশনের ‘রজনী‘, ‘ব্যোমকেশ বঙী‘-র মতো বেশ কিছু ধারাবাহিকও পরিচালনা করেন তিনি। তিনি ‘আইফা’ লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সহ বেশ ক’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ০৪ জুন মৃত্যুবরণ করেন।