কোভিড মহামারী এবং ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও সরকার দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখতে ‘সর্বাত্মক চেষ্টা’ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন প্রশ্নোত্তর পর্বে চট্টগ্রাম–১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকালে বাজেট অধিবেশন শুরু হয় এবং প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা অতিমারী এবং রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব, মূল্যস্ফীতি ও অস্থিরতা দেখা দেয় এবং এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তা দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করে আমাদের সরকার দেশের অর্থনীতিকে দ্রুত করোনাপূর্ব উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৯–২০২০ অর্থবছরে মহামারীর তীব্র সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের ৩.৪৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে সেটাই ছিল সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের ফলে ২০২০–২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৬.৯৪ শতাংশ, ২০২১–২২ অর্থবছরে তা আরো বেড়ে ৭.১০ শতাংশে উন্নীত হয়।
দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখতে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথাও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন। রাজস্ব নীতির আওতায় গৃহীত পদক্ষেপ, সরকারি ব্যয় যৌক্তিকীকরণ, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও কৃষিখাতে ভর্তৃকি, রপ্তানি প্রণোদনা, রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তিনি বলেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, সরকারের কার্যক্রমগুলো নেওয়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হয়েছে এবং দরিদ্র মানুষ তাতে উপকৃত হচ্ছে। জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা–মাওয়া–ভাঙ্গা অংশে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে। এছাড়া ২০২৪ সালের জুনে ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের সব কাজ সম্পন্ন করে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হবে। সংরক্ষিত আসনের এমপি খ. মমতা লাভলীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার পরিবারকে ১৩৪ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।