প্রথমে গাছের গোড়ায় খড়কুটো দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া এরপর গাছগুলো মরে গেলে কয়েকদিন পর এসে তা কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন অভিনব কায়দায় বিভিন্ন সময়ে শতাধিক বৃক্ষ নিধনের অভিযোগ উঠেছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা–কদমতলী ইউনিয়নে।
এমনকি আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে দুর্বৃত্তরা সড়কের পাশের গাছ কেটে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। পরিবেশ রক্ষায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চন্দ্রঘোনা আধুর পাড়া সংলগ্ন তিন কিলোমিটার দীর্ঘ গুমাই বিল চাষি সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। যা প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। ঐতিহ্যবাহী গুমাইবিলের হাজার হাজার কৃষক তাদের কৃষি কাজের ফাঁকে এই গাছগুলোর ছায়ায় বিশ্রাম নেন। এছাড়া বিকাল হতেই সড়কের প্রাকৃতিক এই মনোরম দৃশ্য উপভোগে ছুটে যান বিভিন্ন এলাকার মানুষ। সমপ্রতি এই গাছগুলোর গোড়ায় আগুন লাগিয়ে দিয়ে মেরে ফেলে তা কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এতে সড়কের সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু এই সড়কেই নয়, গুমাইবিলের অন্যান্য সড়কেও একই প্রক্রিয়ায় বৃক্ষ নিধনের ঘটনা ঘটে চলেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকেরা তীব্র রোধের মধ্যে কাজের ফাঁকে সড়কগুলোর গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেন। কিন্ত কিছু অসাধু ও পরিবেশ ধ্বংসকারী লোক বিভিন্ন উপায়ে গাছগুলো পুড়ে আস্তে আস্তে মেরে ফেলে। পরে তা কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এভাবে ইতিমধ্যেই শতাধিক গাছ এই জঘন্য উপায়ে শুধুমাত্র গুমাইবিল চাষি সড়ক থেকেই কেটে নিয়ে গেছে অসাধুচক্রটি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিছ আজগর জানান, ১৯৯৮ সালে গুমাইবিল চাষি সড়কে নিজ উদ্যোগে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। কিন্তু চিহ্নিত কিছু অসাধু ব্যক্তি এই গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি গত কয়েকদিন ধরে আরও কিছু গাছের গোড়ায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। ঈদের কয়েকদিন আগে হাশেম খাল এলাকাতেও ২৫টি গাছ কাটার ঘটনা ঘটেছে। এলাকার মানুষ বাধা দিলে তাতে সংঘর্ষও হয়। গুমাইবিলের অন্যান্য সড়কের গাছ ইতিমধ্যেই সাবাড় হয়ে গেছে। বিষয়গুলো সোমবার (২৯ মে) উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আমি উপস্থাপন করলে প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, এহেন জঘন্যতম কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণকে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।