ইতিহাস চর্চার কথা উঠলেই আমার রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত কবিতার কথা মনে পড়ে– “হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে/ কাজ করে যাও গোপনে গোপনে, মুখর দিনের জীবনের চপলতা মাঝে/স্থির হয়ে তুমি বও/ ভাষা দাও তারে/ হে মুনি অতীত/ কথা কও কথা কও।” আমাদের মুখর চির চঞ্চল জীবনের চপলতায় আমরা ইতিহাসের গতি প্রকৃতিকে প্রায়শই উপেক্ষা করেই পথ চলি কিন্তু আমাদের অন্তর্গত জীবন ও সমাজের নিয়ত দ্বন্দ্ব প্রসূত ঘটনাও পরিবর্তনকে হয় ভ্রান্ত দৃষ্টি বা তাৎক্ষণিকতার নিরিখে বিচার করি নয়তো অদৃষ্টের হাতে অসহায়ের মত ছেড়ে দিই। ইতিহাসের মূল উপাদান মানুষকে প্রচলিত ধারার উচ্চবর্গের ঐতিহাসিকরা সমাজ নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে বিচার করেন না, বিচার করেন সাবজেকটিভ দৃষ্টিভঙ্গী থেকে, বৈষয়িক অবস্থানের প্রভাবকে সামাজিক মর্যাদার মানদন্ড বানিয়ে, সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশের গতিধারাকে বিবেচনার বাইরে রেখে। উৎপাদন সম্পর্কের নিরিখে মানুষের প্রকৃতি পরম্পরাকে, শাসক শাসিতের সম্পর্কের মধ্যে বিচার করার, সম্পদ তৈরির কাজে নিয়োজিত বঞ্চিত শ্রমজীবীদের ইতিহাসের চালিকা শক্তির আসনে বসিয়ে সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের ধারা তথা ইতিহাসের ব্যাখ্যা হল নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার মূল কথা। এ লক্ষ্যে সমাজ বিজ্ঞানী কার্লমার্কস এর যুগান্তকারী প্রতিপাদ্য ইতিহাসের পন্ডিতদের সম্মত স্বীকৃতি পায়নি। মোগল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ নিয়ে তথ্য ভিত্তিক ইতিহাস পাঠ করা যাবে কিন্তু আওরঙ্গজেবের পরে সে সাম্রাজ্য পতনের কারণ শুধু শাসক গোষ্ঠীর অর্ন্তদ্বন্দ্ব নয় বরং নতুন এক বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থার প্রভাবে সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ও আর্থিক দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ভেতর থেকেই মোগল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে। এসবের অনুবীক্ষণিক তথ্য ও বিজ্ঞান ভিত্তিক বিশ্লেষণের চাইতে কিছু স্থূল ঘটনাই ঐতিহাসিকদের বিবেচনায় কাজ করে। ইতিহাসের দ্বান্দ্বিক বিচারে মুক্ত বাতায়নের প্রোজ্জ্বল আলোয় পরিদৃশ্যমান জগতকে সত্য বলে যাঁরা মানতে নারাজ তাঁরা factকে truth এর মর্যাদা দিয়ে hypothesis কে theroy ‘র উঁচুতে স্থান দিয়ে প্রকৃত ইতিহাস চর্চাকে বিঘ্নিত করেন। বিশ্বখ্যাত ভারতীয় ইতিহাসবিদ স্যার যদুনাথ সরকার, রমেশচন্দ্র মজুমদারদের চিরায়ত ইতিহাস পঠন পাঠনের বিপরীতে সেই ৩০ এর দশকে অধ্যাপক সুশোভন সরকার,অধ্যাপক হীরেন মুখোপাধ্যায়, বিনয় ঘোষ, পরবর্তীতে ইরফান হাবিব প্রমুখ ইতিহাস চর্চার এক নবতর ও শক্তিশালী ধারার সূত্রপাত করেন। রনজিত গুহ তাঁদের স্নেহধন্য ছাত্র, গুনগ্রাহী সহকর্মী, প্রেসিডেন্সী ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র। অধ্যাপক সুশোভন সরকারের শিক্ষা ও চিন্তায় প্রানিত হয়ে রনজিত গুহ বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে ছাত্রাবস্থায় ছাত্র ফেডারেশনের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। সার্বক্ষণিক কর্মী হিসাবে ছয় বছর কাজ করার পর ১৯৫৩ সালে বিদ্যাসাগর ও মৌলানা আজাদ কলেজ হয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন। এসময় অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন। বিষয় ছিল কোম্পানীর শাসনামলের প্রথম পর্বে শিল্প, কৃষি ও রাজস্ব ব্যবস্থার পুনবির্ন্যাস। এই গবেষণার ফসল ইতিহাস বিষয়ে তাঁর প্রথম বাংলা প্রবন্ধ “মেদিনীপুরের লবন শিল্প” (১৯৫৪)। তিনি লবন উৎপাদক মলাঙ্গি জনগোষ্ঠীর উপর কোম্পানীর নির্মম নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন। নিম্নবর্গের ইতিহাস নিয়ে তাঁর চিন্তার পূর্বাভাস এ প্রবন্ধেই লক্ষ্য করা যায়। তাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ “A rule of property for Bengal ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয়। এটি লিখতে গিয়ে মহাফেজ খানার নানা দলিল পত্র ঘাঁটতে গিয়ে তাঁর মনে এই মর্মে প্রশ্ন জাগল যে কোম্পানীর কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে অর্থনীতির কোন তত্ত্ব বা আদর্শ কাজ করেছে কিনা। তিনি খুঁজে পেলেন কোম্পানীর উচ্চ পদস্থ আমলা ফিলিপ ফ্রান্সিস এর ১৭৭৬ সালের একটি প্রস্তাব, যার ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে আছে তৎকালীন ইউরোপের রাজনৈতিক অর্থনীতির সূত্র। কোম্পানীর শাসনের শুরুর দিকে ভারতবর্ষ ছিল প্রাচ্যের চিরাচরিত স্বৈরাচার আর সামন্ত প্রভুদের কবলমুক্ত, ব্যক্তিগত সম্পত্তির স্বাধীন মালিকানার ভিতের ওপর নির্মিত কৃষি–বাণিজ্য নির্ভর একটি সচ্ছল দেশ। ১৭৯৩ সালের কর্ণওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ঘোষণায় ফ্রান্সিসের প্রস্তাবের কিছুটা প্রভাব দেখা যায়। সেই ঘোষণার ফলে বাংলায় চালু হল আধাসামন্ততান্ত্রিক, স্থানু, জন্ম থেকে জরাগ্রস্ত এক কৃষি ব্যবস্থা। এসব ভাবনার উপর ভিত্তি করে অধ্যাপক গুহ লিখলেন বিখ্যাত প্রবন্ধ “চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সূত্রপাত”। এই দীর্ঘ প্রবন্ধে তিনি দেখাতে চাইলেন বুর্জোয়া সম্পত্তির ভিতের উপর কৃষিতে ধনবাদ চালুর ইচ্ছা বৃটিশদের থাকলেও অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলায় বুর্জোয়া ব্যবস্থা চালু করার বাস্তবে সম্ভব ছিল না ফলে পুনরায় ফিরে আসল আধা সামন্ততান্ত্রিক খাজনা নির্ভর কৃষি অর্থনীতি। ১৯৫৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৭০–৭১ সালে ভারতে এসে নকশাল আন্দোলনের রূপ ও বৈশিষ্ট্যে প্রভাবিত হয়ে ১৯৮৩ তে লিখলেন “The elementary aspects of peasant insurgency in colonial India . ততদিনে তিনি ইংল্যান্ড ছেড়ে অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন।
নিম্নবর্গের ইতিহাসের কথা বললে আবারো রবীন্দ্রনাথের স্মরণ নিতে হয়। “ওরা কাজ করে” কবিতায় স্পষ্টতই তিনি বলছেন “ওরা চিরকাল/টানে দাঁড়, ধরে থাকে হাল/ওরা মাঠে মাঠে বীজ বোনে/ পাকা ধান কাটে– ওরা কাজ করে নগরে প্রান্তরে।” জগত সংসারে নিম্নবর্গদের প্রকৃত অবদান তিনি এভাবে তুলে ধরেন। ইতালির কমিউনিষ্ট নেতা গ্রামচির “সাবলটার্ন ক্লাশ” নিয়ে ৫০ও ৬০ এর দশকে বিশ্বব্যাপী আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনা থেকে নিম্নবর্গের ইতিহাস নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত। ঔপনিবেশিক ইতিহাস রচয়িতারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে ঔপনিবেশিক শাসন প্রাক ঔপনিবেশিক শাসনের চেয়ে উন্নত ছিল। এর সাথে সুর মিলায় ভারতীয় উচ্চবর্গীয় জাতীয়তাবাদী ইতিহাসবিদরা। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরে শাসক শ্রেণি আশ্রিত যে এক সম্পন্ন মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণি গড়ে উঠে। ঐ শ্রেণিটিই পরাধীন ভারতের উচ্চ বর্গ। সেই উচ্চবর্গ থেকে আগত ঐতিহাসিক নওরোজী, গোখলে, রমেশ দত্ত, স্যার যদুনাথ সরকার, রমেশ চন্দ্র মজুমদার প্রমুখের ইতিহাস চর্চা বা কথিত “জাতীয়তাবাদী ইতিহাস” ঔপনিবেশিক ইতিহাস রচয়িতাদের মতই উচ্চবর্গীয়। নিম্নবর্গের ইতিহাস ঔপনিবেশিক ও জাতীয়তাবাদী এই দুই ধারার ইতিহাসের বিপরীতে এক প্রতিস্পর্ধী স্বর। ১৯৮২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে তিনি “নিম্নবর্গের ইতিহাস” নামে একটি প্রবন্ধ পাঠের মধ্য দিয়ে নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চা শুরু করেন। ঐ বছরই “সাবলটার্ন স্টাডিজ” নামে ইংরেজি সিরিজ গ্রন্থমালার প্রথম খন্ডটি তাঁর সম্পাদনায় বের হয়। পরপর প্রায় ছয়টি খন্ড তাঁর সম্পাদনায় বের হবার পর বিশ্বব্যাপী এই নতুন ধারার ইতিহাস চর্চার নব এক দিগন্ত খুলে যায়। তিনি আমন্ত্রিত হতে থাকেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। এ সময়ে নিম্নবর্গের ইতিহাস নিয়ে তিনি একের পর এক রচনা করেন “ Dominance without hegemony” (1997), History at the limit of world History (2002) The Small voice of history(2009) প্রভৃতি সাড়া জাগানো গ্রন্থ। এ সময়ে তাঁর সাথে যুক্ত হন কিছু মেধাবী তরুন ইতিহাসবিদ যাঁদের মধ্যে দীপেশ চক্রবর্তী, পার্থ চট্টোপাধা্যায় প্রমুখ এক ঝাঁক তরুণ ইতিহাসবিদ রয়েছেন।
“নিম্নবর্গের ইতিহাস” প্রবন্ধে আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়ে অধ্যাপক রনজিত গুহ ঔপনিবেশিক ভারতের ইতিহাসকে অখন্ড কোন ইতিহাস বলতে নারাজ। তিনি বলেন প্রথমত উচ্চবর্গও নিম্নবর্গের রাজনীতিতে ভারতের ইতিহাস বিভক্ত। এই দুই ধারার ইতিহাসও পরস্পর বিপরীতধর্মী। দ্বিতীয়ত উচ্চ ও নিম্নবর্গের পারস্পারিক সম্পর্ক প্রভুত্ব ও অধীনতার সম্পর্ক। নিম্নবর্গের ইতিহাস তিতুমীর, সিঁধো–কানহু প্রমুখ কৃষক ও আদিবাসী নেতা তেভাগা, হাজং ও নানকার আন্দোলনের কৃষক ও আদিবাসীদের আত্মদানে আন্দোলনের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ বলে অধ্যাপক গুহ মনে করেন। উচ্চবর্গ ও নিম্নবর্গের প্রভু–ভৃত্যের সম্পর্কটি মূলত শাসক ও শোষিতের সম্পর্ক এবং যে অর্থনীতি সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে সেই অর্থনৈতিক ইতিহাসের স্বরূপ উন্মোচন করাই নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার মৌল উদ্দেশ্য। নিম্নবর্গের চিন্তা ও আন্দোলন মূলত প্রতিকূল সমাজ বাস্তবতার কারনে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আকাংখা ও অক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিদীর্ন। এই দ্বন্দ্ব, অক্ষমতা ও অসহায়তা তাদের ধর্ম ভাবনার অনেকটা স্থায়ী এক সমাজ মানসের ধোঁয়াশায় ঢেকে দিয়েছে বলে গুহ মনে করেন। নিম্নবর্গের নানাধর্মী আন্দোলনের নেতাদের এক ইউটোপীয় সাম্যের রাষ্ট্র আকাংখা এক সময়ে উৎসাহিত করে তাদের নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে জমায়েত হতে আবার অসাধ্যতা, অনিশ্চয়তার হতাশা তাকে ধর্ম ও পারলৌকিকতার বৃত্তে ঠেলে দেয়। এ দ্বন্দ্বের ইতিহাস হল নিম্নবর্গের ইতিহাসের প্রায় সতত চলমান রূপ।
অধ্যাপক রণজিত গুহের নিম্নবর্গের ইতিহাস আলোচনায় কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তাঁর লেখায় নিপীড়িত শ্রেণির কথা আসলেও এদের শ্রেণিগত উত্তরণের মৌলিক শর্ত হিসেবে দ্বান্দ্বিক বিকাশ তথা শ্রেণি সংগ্রামের বিষয়টি কিছুটা উপেক্ষিত হয়েছে, অনুল্লেখিত থেকে গেছে নিম্নবর্গের অভ্যন্তরীন স্তর বিন্যাসের প্রেক্ষিতে নানা পেশা ও শ্রেণির মুক্তির প্রশ্নে তথা সমাজ পরিবর্তন বা বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদানকারী সম্ভাব্য শক্তির শ্রেণি অবস্থানের কথা। এ বিষয়ে যেকোন অস্পষ্টতা পরিবর্তনকে বিভ্রান্তির চোরাবালিতে ফেলতে পারে। উল্লেখ্য তিনি ও তাঁর অনুগামীরা একসময় মার্কস পন্থাকে গ্রহণ করলেও এর সৃজনশীল প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিধান্বিত ছিলেন বরং এক্ষেত্রে ইরফান হাবিব নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চায় যেমন গুরুত্ব দিয়েছেন তেমনি নিম্নবর্গের সামাজিক মুক্তির পথও মার্কসীয় ইতিহাস ও সমাজ বিদ্যার মধ্যে অনুসরণ করেছেন।
সমাজ ও ইতিহাস ভাবনার পরিপূরক হিসাবে শেষ জীবনে অধ্যাপক গুহ সাহিত্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছেন একজন সাহিত্য সমালোচকের সচেতন রূপদক্ষতায়। রবীন্দ্র সঙ্গীতের ভাব সম্পদ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ঋতুপর্বের গানগুলো নিয়ে তাঁর আলোচনা সত্যিই প্রশংসনীয়। রামমোহন–বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কারের অন্তর্গত প্রেরণা ও তাঁদের সাহিত্য আলোচনা যেমন করেছেন তেমনি বঙ্কিমের দ্বান্দ্বিক মননশীলতা, ত্রিশোত্তর বাংলা কবিতার আধুনিকতার গতি প্রকৃতি অনায়াস নৈপুণ্যে তাঁর লেখায় প্রাঞ্জলভাবে উঠে এসেছে। বিভূতিভূষণ, সুনীল হয়ে শঙ্খঘোষ পর্যন্ত তাঁর আলোচনা ও ভাবনার বৃত্ত আমাদের সাহিত্য চিন্তাকে প্রভাবিত করেছে। একজন ঐতিহাসিক ও সমাজ বিজ্ঞানীর দ্বান্দ্বিক দৃষ্টিতে ব্যক্তি, প্রকৃতি ও সমাজের আন্তঃসম্পর্কের স্বরূপ বের করাই ছিল রণজিত গুহের সাহিত্য ভাবনার মূল উদ্দেশ্য। নতুন এক কাব্যিক ভাবনা ও আলোচনার মননশীল নতুন জগতের সন্ধান পাওয়া যায় তাঁর সাহিত্য বোধে। অশীতিপর বয়সে সাহিত্য নিয়ে তাঁর এই বিস্তৃত ভাবনা পৃথক আলোচনার দাবী রাখে। অধ্যাপক রনজিত গুহের প্রায় শতবর্ষের পরিণত প্রয়াণের পরেও বাঙালির চিন্তা জগতে সৃষ্ট মননের শূন্যতা অপূরণীয়। তাঁর বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীল ভাবনা ও কর্মের অমূল্য অবদান তাঁকে বাংলার সারস্বত জগতে স্মরণীয় করে রাখবে।
লেখক : প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক