প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও সফল রাষ্ট্রনায়ক। অসীম সাহসিকতায়, স্বচ্ছতায় ও সততায়, বিপুল আত্মবিশ্বাসে এবং দৃঢ়তায় তিনি এগিয়ে চলছেন। একটার পর একটা ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছেন। যে ইতিহাস অনন্য ও অসাধারণ। গত ১৫ মে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সব কথা বলেছেন, এক কথায় সেসব বক্তব্য সাহসিকতায় পরিপূর্ণ। কারো কোনো চাপ বা চোখ রাঙানিকে তিনি পরোয়া করেন না। বলেছেন, বাংলাদেশের ওপর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেসব দেশের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার জন্য সরকারি ক্রয়বিধিতে নতুন ধারা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলে দিচ্ছি, আমাদের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, এখন থেকে আমরা যে বিদেশ থেকে জিনিসপত্র ক্রয় করি, সেখানে আমাদের একটা ক্লজ থাকবে যে, যারা আমাদেরকে স্যাংশন দেবে, তাদের থেকে আমরা কোনো কিছু কেনাকাটা করব না। বাংলাদেশের ওপর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে কিছু না কেনার সিদ্ধান্ত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পরিষ্কার কথা, এতে সংকট আর ভয়ের কী আছে? আমরা তো কারও উপর এই রকম নির্ভরশীল না এখন।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে কী কারণে স্যাংশন দিল? যাদেরকে দিয়ে আমরা সন্ত্রাস দূর করলাম, যাদেরকে দিয়ে দেশে শান্তি। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তারপর এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে পারেনি। কারণ, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ভালোভাবে কাজটা করেছে, গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নজরদারি এত ভালোভাবে করেছে, আর কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেনি। এরপরও স্যাংশনটা কীসের জন্য, সেটাই তো আমার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, আমাদের এত দুশ্চিন্তা কিসের? কথা নাই বার্তা নাই স্যাংশনের ভয় দেখাবে আর আমরা ভয়ে বসে থাকব, কেন? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, যারা আমাদের সপ্তম নৌবহরের ভয় দিয়েছিল, আমরা সেটাও পার করে বিজয় অর্জন করেছি। এ কথা ভুললে চলবে না। আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে চলতে হবে। আত্মবিশ্বাস থাকলে এক বেলা খেয়ে থাকব, তাতেও অসুবিধা নাই।
আসলে শেখ হাসিনা সততা ও সাহসিকতার এক মূর্তপ্রতীক। স্বজন হারানো ব্যথা, ধৈর্য্য আর সাহস দেশ পরিচালনায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শক্তি যোগায়। গভীর নিষ্ঠা, সততা ও সাহসিকতায় সব প্রতিকূলতাকে দু‘পায়ে মাড়িয়ে চরম সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর সত্য কথা বলার মতো সৎ সাহস রয়েছে। তিনি অকপটে সত্য কথা বলেন। যা বলেন তা জেনে শুনেই বলেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন, শেখ হাসিনার দক্ষতা, সাহসিকতা ও সফলতার কারণেই বাংলাদেশ এখন গৌরবের আরেক চূড়ায় অবস্থান করছে। তাঁর অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, মেধা, বিচক্ষণতা, আত্মপ্রত্যয় ও দূরদর্শিতার কারণে তিনি এখন বিশ্ব নেত্রী। সাহসিকতা ও দূরদর্শী কিছু পদক্ষেপ সমূহের আলোকে বলা যায়, শেখ হাসিনার সততা ও সাহসিকতা জাতির অনুপ্রেরণার উৎস। তবে জনগণের শক্তিতেই শেখ হাসিনা অনন্য।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর পরীক্ষিত নেতারা ছেড়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো অসীম সাহসিকতা ধারণ করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আত্মমর্যাদাবোধের মধ্য দিয়ে।
বিশ্ব নেতাদের সামনে বাংলাদেশের সফলতা নিয়ে শেখ হাসিনার সাহসী উচ্চারণ যেন তাঁর ভাবনার প্রতিচ্ছবি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা, সাহসিকতা, দেশপ্রেমের কারণেই দেশী–বিদেশী সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা পদ্মা সেতুর কথা উল্লেখ করতে পারি। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের সক্ষমতা আরও একবার চিনিয়েছেন। পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতুই নয়, এটি আমাদের অনন্য গৌরব, মর্যাদা আর অহংকারের প্রতীক। দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণের অনবদ্য উপাখ্যান। মাথা না নোয়ানো বাংলাদেশের দিকে অবাক বিস্ময়ে বিশ্ববাসীর তাকিয়ে থাকার প্রোজ্জ্বল উপলক্ষ্য। এ সেতুর প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনার প্রত্যয় আর দৃঢ়তার প্রতিচ্ছবি।
ঠিক তেমনি ১৫ মে গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বক্তব্য সাহস আর দৃঢ়তার প্রতিবিম্ব। আমরা দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে পারি, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয় একটি দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।