ঋণদাতার ঘরে ঋণগ্রহীতার লাশ

রাউজান প্রতিনিধি | বুধবার , ১৭ মে, ২০২৩ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

রাউজানে ঋণদাতার ঘর থেকে ঋণ গ্রহীতা দিদারুল আলম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ঋণদাতা মোহাম্মদ ইউনুছের ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। দিদার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামীপাড়া গ্রামের কাজী শামশুল আলমের ছেলে এবং এক সময় কাতার প্রবাসী ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিদার দেশে ফিরে এসে শুরু করেছিলেন সিএনএফ ব্যবসা। পুঁজির যোগান দিতে তিনি প্রতিবেশি ইউনুছ, ইদ্রিস ও আলমগীরের কাছ থেকে কয়েক কিস্তিতে ২৭ লাখ টাকা চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিলেন।

ব্যবসা শুরু পর থেকে মুনাফা করতে না পেরে লোকসানে পড়েছিলেন। একারণে তিনি বিশাল অংকের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েন। এই অবস্থার ঋণদাতারা তাদের টাকা ফেরত পেতে দিদারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা হুমকি ধমকি দেয়া শুরু করার পাশাপাশি তার নামে চেক প্রতারণার মামলা করেন। এই অবস্থার মধ্যে দিশেহারা দিদার গোপনে সপরিবারে বাড়ি ছাড়েন। ২১ সাল থেকে ছিলেন নিরুদ্দেশ। গত শুক্রবার রাতে (১২ মে) দিদারকে অজ্ঞাতস্থান থেকে ধরে এনে ঋণদাতা ইউনুছ তার ঘরে আটকে রাখেন। এই অবস্থার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে দিদার পাখার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন ইউনুছের স্ত্রী।

ইউনুছের স্ত্রী শামশুন নাহার বলেন, দিদারুল আলম ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তার দাবি দিদারকে একটি কক্ষে দুপুরের খাবার দিয়েছিলাম। পরে ওই কক্ষে গিয়ে দেখি একটি ছেঁড়া লুঙ্গিতে পাখার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনা দেখে ইউনুছসহ আমি ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তার দেহ নামিয়ে রাখি।

দিদারের ছোট ভাই কাজী মিনহাজের দাবি তার ভাইকে আটকে রেখে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি হত্যাকারীদের দৃষ্টন্তমূলক শাস্তি চান। পরিবারের পক্ষে খুনের মামলা করা হবে বলেন।

নিহতের স্ত্রী ফেরদৌস আকতার বলেন, ঋণদাতাদের হুমকি ধমকির মধ্যে আমরা দুই বছর আগে বাড়ি ছেড়েছি। ইউনুছ গংদের হুমকিতে ভয়ে আমার স্বামী এতোদিন নিরুদ্দেশ ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে জানতে পারি তাকে ধরে এনে ইউনুছ ঘরে আটকে রেখে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। এ বিষয়ে রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, মৃত দেহ আমরা বিছানায় সোয়া অবস্থায় পেয়েছি। ঘটনা রহস্য উদঘাটনে আমরা চেষ্টা করছি। পরিবারের সদস্যরা মামলা করবেন বলে জানিয়েছে। থানায় আসলে মামলা নেয়া হবে। লাশের সুরুতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত অটোরিকশা চালক মনির গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধ‘এ’ ইউনিটের দুই শিফটে উপস্থিত ৭৯.৫৬ শতাংশ