জেটি ও বন্দর চ্যানেল ফাঁকা

সবকটা জাহাজ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে গভীর সাগরে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৪ মে, ২০২৩ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

ব্যস্ততম চট্টগ্রাম বন্দরের চিরচেনা দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে গেছে। বন্দরে কোনো জাহাজ না থাকায় প্রতিটি জেটি খাঁ খাঁ করছে। জাহাজ নেই বন্দর চ্যানেলেও। ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত হানার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সবগুলো জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের শংকায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪ নম্বর এ্যালার্ট জারি করে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি), চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনাল (সিসিটি) এবং জেনারেল কার্গো বার্থসহ (জিসিবি) বন্দর চ্যানেলের সব জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দিয়েছে। বন্দর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজও কালুরঘাট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বন্দর চ্যানেল এবং জেটিতে বর্তমানে আর কোনো জাহাজ নেই।

বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, শনিবার ভোর ৪টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলোকে জাহাজ শূন্য করার কাজ শুরু করে বন্দরের মেরিন বিভাগ। ১৮টি জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয় বিভিন্ন জেটি থেকে। বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলটরা টাগবোটের সহায়তায় একে একে জাহাজগুলো বহির্নোঙরে পৌঁছে দেন। কর্ণফুলী নদীতে জোয়ার থাকাবস্থায় সকাল সাতটা পর্যন্ত অপারেশন চলে। কিন্তু ভাটার কারণে নেওয়া যায়নি পতেঙ্গা ওয়াটারবাস জেটিতে অবস্থানরত বে ওয়ান, ৭ নম্বর জেটিতে থাকা এমভি নেগার এবং ১০ নম্বর জেটিতে থাকা এমভি লোটাস নামের তিনটি জাহাজ। পরবর্তীতে গতকাল বিকেল ৩টা নাগাদ উক্ত তিনটি জাহাজকেও বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্কতা সংকেত অনুযায়ী বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট৪ জারি করা হয়েছে। এর ফলে জাহাজ থেকে পণ্য, কনটেইনার লোডআনলোড বন্ধ হয়ে গেছে। বন্দরের কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বন্দরের মেরিন, নিরাপত্তা, ট্রাফিক ও সচিব বিভাগের পৃথক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলেও বন্দর সচিব জানিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় মোখার পরিস্থিতি নিয়ে বন্দর ভবনে দফায় দফায় বৈঠক করে সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতরাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, বন্দর চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানলে বন্দরের চ্যানেল, জেটি, হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট, আমদানিরপ্তানি পণ্য নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় সবধরনের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার ব্যাপারটি এখানে সিডিউল করা আছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির উপর একটির পর একটি পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থার পাশাপাশি সর্বাত্মক মনিটরিং করছে বলেও বন্দর সচিব জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়কে যানবাহন কম, গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া
পরবর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড়ে বঙ্গবন্ধু টানেলের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ৮ ব্যবস্থা