জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী প্রস্তুতি

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

উখিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৪ মে, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোখা তীব্র হওয়ায় জাতিসংঘের সংস্থাগুলি সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত বলে গতরাত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ক্লেয়ার নুলিস বলেছেন, অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরে দ্রুত শক্তিশালী হচ্ছে। যা এ অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস এবং ভূমিধসের কারণ হতে পারে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও গত বছর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রং এর ধ্বংসযজ্ঞ থেকে তারা রক্ষা পেয়েছিল। এরপরও ৩৫ জন রোহিঙ্গা সিত্রাংয়ে মারা গিয়েছিল এবং ২০ হাজারেরও বেশি গৃহহীন হয়েছিল। এতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৩৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছিল।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) মতে, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মোখা সরাসরি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দিকে এগোচ্ছে। সংস্থার কক্সবাজারের ডেপুটি চিফ অফ মিশন, নিহান এরদোগান বলেন, দুর্যোগের ক্ষতি হ্রাসে বাংলাদেশের একটি ব্যাপক প্রস্তুতির পরিকল্পনা রয়েছে, আইওএম যার একটি অংশীদার। তিনি জানান, আইওএম পরিচালিত ১৭টি ক্যাম্পে সাইক্লোন প্রস্তুতি এবং পতাকা সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উপর প্রতিটি ক্যাম্পে ১০০ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জরুরি আশ্রয়ের উপকরণ, স্বাস্থ্যবিধি কিট এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সকল স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদান করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কক্সবাজারে ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং ৩৩টি মোবাইল মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে বলে সংস্থাটির মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জানিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) প্রায় ২৩০ টন শুকনো খাবার এবং ২৪.৫ টন ফোর্টিফাইড বিস্কুট প্রস্তুত রেখেছে। এছাড়াও প্রয়োজনে সাহায্য সংস্থাগুলি দৈনিক ৫০ হাজার মানুষকে রান্না করা গরম খাবার সরবরাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র ওলগা সাররাডো জানান।

গতরাতে সংস্থাটি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে, আমরা আশঙ্কা করছি ঝড়ের প্রভাবে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাতসহ ভূমিধস এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বন্যা হতে পারে। ক্যাম্পে প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে, বিদ্যুৎ সরবরাহ, মোবাইল ফোন টাওয়ারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সংস্থাটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং এর মানবিক অংশীদারদের সাথে কাজ করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এবং ভাসানচর দ্বীপে জরুরি প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১১ মিলিয়ন অ্যাকোয়া ট্যাবলেট, ৬০ হাজার জেরিক্যান, ৩ লক্ষ পিস সাবানসহ টারপলিন, দড়ি এবং ফ্লোর ম্যাটগুলির মতো আশ্রয়ের জরুরি উপকরণগুলোর মজুত রয়েছে। এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক, ছয়টি মেডিকেল টিম এবং স্ট্যান্ডবাইতে দুটি অ্যাম্বুলেন্স জরুরি কাজে ব্যবহারের প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমোখা কক্সবাজার থেকে ৪৫০ কিলোমিটারের মধ্যে (লাইভ আপডেট দেখুন)
পরবর্তী নিবন্ধগরমে আদালতে পরতে হবে না কালো কোট-গাউন