গাজীপুরে নানান ব্যবসায় যখন জাহাঙ্গীর আলমের সুসময় তখন তার মতো তার মা জায়েদা খাতুনও গরিব মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। বিপদে পড়া কাউকে কাউকে অটোরিকশাও কিনে দিয়েছেন। তবে তিনি কখনও ভোটে দাঁড়াবেন বিষয়টা কল্পনাতেও ছিল না স্থানীয়দের। অথচ আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে ভোট হতে যাচ্ছে, তাতে এখন আলোচিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর তার কর্মী সমর্থকরা এখন মায়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।
গতকাল প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে জায়েদা দাবি করেছেন, তার ছেলের প্রতি ‘অন্যায়’ করা হয়েছে। এ কারণেই তিনি ভোটে নেমেছেন। আর সেই ‘অন্যায়ের’ প্রতিবাদেই সবাই তার পাশে থাকবে এবং তিনি ভোটে জিতবেন। খবর বিডিনিউজের।
জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন। তবে মায়ের পক্ষে ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। গাজীপুর সদরের ছয়দানা এলাকার বাসায় জাহাঙ্গীরের বাড়িতেই থাকেন তার মা। স্থানীয় সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে তিনি গেছেন মাঝেমধ্যে। তবে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে সেভাবে আসেননি তিনি। এমনকি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনও যাননি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর আগেই অন্য প্রার্থীরা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরছেন। কিন্তু তাও করেননি জায়েদা। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর গাজীপুরের ভোটে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এবং মাকে প্রার্থী করতে জাহাঙ্গীর মনোনয়ন কিনলেই শুরু হয় জায়েদাকে নিয়ে আলোচনা।
এখন পর্যন্ত অনেকের ধারণা, জাহাঙ্গীর যদি শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে না পান, তাহলে তিনি মায়ের পক্ষে সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন। তবে আওয়ামী লীগে অবস্থান হারানোর পর নেতাকর্মীদের একটি অংশ পক্ষত্যাগ করায় তিনি মায়ের পক্ষে কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এর মধ্যে গতকাল প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যম কর্মীদের সামনে এলেন ৭০ বছর বয়সী জায়েদা। বললেন, তিনি কেবল জাহাঙ্গীরের না, সবার মা। তার ছেলে ‘যড়যন্ত্রের শিকার’ এমন অভিযোগও করেন জায়েদা। বলেন, তার প্রতিবাদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। তার বিশ্বাস জনগণ তার পাশে আছে এবং ভোটে তিনিই জিতবেন।
এই নির্বাচনে প্রার্থী আছেন ৯ জন। সোমবারের মধ্যে ভোট থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ আছে। এরপরে বোঝা যাবে শেষ পর্যন্ত কাদের মধ্যে হবে লড়াই। তবে মূল লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং ‘বিএনপি পরিবারের’ সরকার শাহনূর ইসলাম রনি থাকছেন। জাহাঙ্গীর যদি উচ্চ আদলতে যান এবং তার আবেদন যদি গ্রহণ হয়, তাহলে তিনি নাকি তার মা ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন; আর থাকলেও কতটা প্রভাব থাকবে, এ নিয়েই চলছে ভোটের আলোচনা।












