কথায় প্রচলন আছে যে, স্বদেশী পণ্য ব্যবহার করে হও ধন্য, নিজের মাঝে মাতৃভূমির প্রতি নাড়ির টান, যখন কাজের প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাওয়া হয়, তখন বিদেশি বিমান পছন্দে তালিকায় থাকতো, কিন্তু এইবার পবিত্র রমজান মাসে ওমরা পালন উদ্দেশ্য বাংলাদেশ বিমানে সৌদি আরব যাত্রা করি, দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশ বিমান হচ্ছে আমাদের জাতীয় সম্পদ এবং তার যথাযথ ব্যবহার প্রতিটা নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব, এইটা যেমন সাধারণ জনগণ কর্তব্য, তেমনই বিমান কর্তৃপক্ষ সর্বসাধারণের মৌলিক সেবাগুলা প্রদান করা একান্ত কর্তব্য।
দুঃখের সাথে বলতে হয় বিমান কর্তৃপক্ষের অবস্থা দেখলে মনে হয় ঠেকায় পড়ে তাদের সেবা দেওয়াটা একান্ত কর্তব্য মনে হচ্ছে, যেহেতু যাত্রাটা ছিল রমজান মাসের, ইফতার সেহেরী একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে ইফতারের আইটেমগুলো দেখে মনে হল ফুটপাতের কোনো টোকাই কে ইফতারি প্রদান করা হলো, এত নিম্নমানের মুখে দেওয়া দুষ্কর, সেহরির কথা বলতে গেলে আরো লজ্জার বিষয় কিছুটা চিকেন চিলি, একটুখানি ভেজিটেবল, মোটা চাউলে ভাত। জঘন্যতম এক আহার। তার উপর মড়ার উপর খাড়ার ঘা, আই বুড়ি বিমানবালা একবার থেকে দুইবার ডাকলে মনে হয় মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেললাম। খাবার পানি যদি একবার থেকে দুইবার চাওয়া হয় কোনো রকম দেওয়ার সুযোগ নেই, সোজা জবাব। নাস্তার আইটেমগুলো তো আরো জঘন্য, দেখলে মনে হয় গলির মুখ থেকে বেকারির নাস্তা দেওয়া হল। ইঞ্চি মাপা কেক, ক্ষুদ্র আকৃতির বন, মাখন এর নামে চিনি মিশ্রিত ময়দা। কোল্ড ড্রিংকস খুঁজলে গ্লাসে করে একটু করে পেপসি অথবা সেভেন আপ দেওয়া হয়। এ হচ্ছে বাংলাদেশ বিমানের খাদ্য তালিকা।
বাংলাদেশ বিমানের যে মনিটরগুলো আছে পাঁচটা ঠিক আছে তো ১শত টা খারাপ, এসব দেখে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যাওয়ার অবস্থা, এই যদি হয় আমাদের জাতীয় সেবার নমুনা, আমরা কোথায় বাস করছি, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে কেন বা বাংলাদেশ বিমানে বাংলাদেশী মানুষ ভ্রমণ করবে। বাংলাদেশ বিমান দেখভাল করার কি কেউ নেই, মাঝেমধ্যে পত্র–পত্রিকা দেখি, বাংলাদেশ বিমান লোকসানে আছে। এরূপ সেবা প্রদান করলে ইহজনমে লাভের মুখ কি দেখবে বাংলাদেশ বিমান। আমার ধারণা বাংলাদেশ বিমান সম্পূর্ণরূপে দুর্নীতিগ্রস্ত, প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধারা, তাদের খুব বেশি হয়রানির শিকার হতে হয়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে উপার্জন করে সে সব অর্থকড়ি– মালপত্র পত্র নিয়ে আসে, সেগুলো নিয়ে প্রবাসীদেরকে নাজেহাল হতে হয়। এসব অনিয়ম দুর্নীতি থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় একমাত্র আল্লাহই জানে। বাংলা বিমান কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি, কিছু সংখ্যক দুর্নীতিগ্রস্ত লোকের কারণে বাংলাদেশ বিমানের সুনাম রসাতলে যাচ্ছে।