২০২২ ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক আজাদীতে ‘এক ঘাটের উপর নির্ভর ৪ লাখ দ্বীপবাসী’ এ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এক বছর পর হলেও একাধিক ঘাট চালুর উদ্যোগ নেয়ায় আশার আলো দেখা দিয়েছে সন্দ্বীপের নৌ যাতায়াতে। গাছুয়া–সীতাকুণ্ড ও গুপ্তছড়া–রাসমনি (হালিশহর) ঘাট দিয়ে যাত্রী ও মালামাল পারাপারের উদ্যোগ নিয়েছে উভয় ঘাটের কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হালিশহরের রাসমনী ঘাট থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী একটি ট্রলার প্রায় দেড় ঘণ্টার মধ্যেই সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে এসে পৌঁছায় বলে জানান রাসমনি ঘাটের ইজারাদার নাজিম উদ্দীন। এদিকে সন্দ্বীপবাসীর স্বপ্নের ফেরি চলাচলের জন্য গাছুয়া–বাকখালী (সীতাকুণ্ড) নৌরুটে যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার হয় তা দৃশ্যমান সূচনা হয়েছে গাছুয়া প্রান্তে। প্রায় আড়াই কিলোমিটারের দীর্ঘ সংযোগ সড়ক এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। বেড়িবাঁধের বাইরে এ জায়গাটি বর্ষায় বেশিরভাগ সময় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হত। আবার রাস্তা না থাকায় এ দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে আসতে হত বিধায় এ ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার একরকম বন্ধই থাকতো বলা যায়। এখন বেড়িবাঁধ থেকে সাগরের কিনারা পর্যন্ত ২০ ফুট উচ্চতার রাস্তা নির্মিত হওয়ায় অনায়াসে যাত্রীরা একবারে কূলে চলে আসতে পারবে বলে জানান ঘাট সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া গাছুয়া ফেরি ঘাটটি সন্দ্বীপ চ্যানেলের ভিতরে অবস্থিত হওয়ায় এখানে ঢেউয়ের তীব্রতা তুলনামূলক কম থাকে।
বৃহস্পতিবার সকালে সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আলাউদ্দিন বেদন, জেলা পরিষদের সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, হারামিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, গাছুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা, সারিকাইত ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনীর, অধ্যক্ষ মোকতাদের আজাদ, ধারাভাষ্যকার ফছিউল আলম ফসি, ঘাট ইজারাদার আদনান জাবেদসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা ফেরির সংযোগ সড়কের কাজ পরিদর্শন করেন।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা সাংবাদিকদের বলেন, সন্দ্বীপের সাংসদের বিশেষ বরাদ্দ থেকে মাটির রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্ষাকালে জোয়ার আর বৃষ্টির পানি থেকে একে রক্ষার জন্য দুইপাশে স্লোব ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিত রাস্তাটি কতটুকু টেকসই হবে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু এটি মাটির রাস্তা তাই বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিবছর এটা মাটি ভরাট করে মেরামত করতে হবে। আর মাটিগুলো যখন পুরোপুরি বসে যাবে তখন এটাকে আরসিসি ঢালাই দেয়া হবে। আসলে ফেরি চলাচলের জন্য যে বড় ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার এ রাস্তা নির্মাণের মধ্যে দিয়ে সেটার শুরু বলা যায় বলে জানান ইউএনও। তিনি আশা প্রকাশ করেন অচিরেই সন্দ্বীপবাসী তাদের স্বপ্নের ফেরির মাধ্যমে যাতায়াতের সুবিধা পাবেন। এদিকে ফেরি চলাচলের জন্য যে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছে সেটির সর্বোচ্চ মান যেন বজায় রেখে কাজ করা হয় তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব সন্দ্বীপের সচেতন নাগরিকরা।