এবার ঝাড়ু মিছিল করে নগর মহিলা দলের ‘মনোরঞ্জন ও বাণিজ্যিক কমিটি’ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির একাংশের নেতৃবৃন্দ। গতকাল বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নূর আহম্মদ সড়কে এ ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নগর মহিলা দলের কমিটি বাতিলের দাবি জানায় নেতৃবৃন্দ। কমিটি গঠনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিক নির্দেশনাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।
সমাবেশ থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যমান কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি না দিলে কমিটি এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, মানববন্ধন ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মহিলাদলের যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা বাদশা। জেসমিনা খানমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আঁখি সুলতানা ও দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটা। এর আগেও কমিটি বাতিলের দাবি করায় গত ২৬ এপ্রিল এ চার নেত্রীর দলীয় পদ স্থগিত করে কেন্দ্র।
জানা গেছে, গত ৩০ মার্চ পুরনো দুই নেতৃত্ব বহাল রেখে অর্থাৎ মনোয়ার বেগম মনিকে সভাপতি ও জেলী চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩৬ সদস্য বিশিষ্ট নগর মহিলা দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ দুই জন এর আগেও টানা দুইবার একই পদে ছিলেন। নতুন নেতৃত্ব না আসার প্রতিবাদে ওইদিনই জেসমিনা খানম, আঁখি সুলতানা ও দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটাসহ ১৩ জন পদত্যাগ করেন। তারা ঘোষিত কমিটিকে ‘মনোরঞ্জন ও বাণিজ্যিক কমিটি’ দাবি করেন। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে কমিটিতে পদ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পূর্বের কমিটির সিনিয়র সহ–সভাপতি ফাতেমা বাদশা। সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘোষিত কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর ৬ এপ্রিল এ চারজনকে শোকজ করে কেন্দ্র। এর সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় তাদর দলীয় পদ স্থগিত করা হয়।
এদিকে পদ স্থগিত করলেও প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া এবং পদবঞ্চিতরা। সর্বশেষ গতকাল ঝাড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে ফাতেমা বাদশা বলেন, ত্যাগী নেতাকর্মীদের পদবঞ্চিত করে এবং জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ঘোষিত এক চোখা কমিটি আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছি। তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ এ পকেট কমিটি মানে না। ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর আগে টানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেও ১৫ থানা ও ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ডে কমিটি করতে পারেনি।
ঘোষিত কমিটির সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি ও সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী পূর্বেও দুইবার মহিলা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছে। দীর্ঘ ১০ বছর দায়িত্বে থেকে ১৫ টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ডে কোনো কমিটি করতে পারেনি। তারা সাংগঠনিকভাবে ব্যর্থ। এরপরও তাদের বহাল রেখে পুনরায় কমিটি ঘোষণা করায় তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগীরা স্থান না পেলেও এক পরিবারে দুইজনকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মা’কে সহ সম্পাদক এবং তার মেয়েকে সম্পাদক করা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে ৮ জনকে। যা অতীতে কোনো সময় হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় এটা অগোছালো কমিটি। জেসমিনা খানম বলেন, আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষিত কমিটি বিলুপ্ত করা দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে অবিভাবক সংগঠন বিএনপির নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আঁখি সুলতানা বলেন, পদ স্থগিত ও বহিস্কারকে ভয় পাই না। পদ না থাকলেও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনসহ দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকব। আমরা আমাদের ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন চাই।
ঝাড়ু মিছিলে সায়মা হক, আরজুন্নাহার মান্না, রোখসানা বেগম মাধু, জিন্নাত রাজ্জাক জিনিয়া, জুলেখা বেগম জুলি, নার্গিস বেগম, খায়রুন নেছা, মনোয়ারা বেগম হেনা, নাজমা বেগম সহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।












