নতুন রূপে সাজবে আউটার স্টেডিয়াম

নকশা প্রণয়ন, ৭ মে থেকে কাজ শুরু আবারো মুখর হবে খেলোয়াড়দের পদচারণায়

নজরুল ইসলাম | বৃহস্পতিবার , ৪ মে, ২০২৩ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হচ্ছিল। অনেকেই এই আউটার স্টেডিয়াম দেখে হতাশ হয়েছেন। কারণ এই আউটার স্টেডিয়াম থেকেই যে অনেকেই তারকা হয়েছে। সে আউটার স্টেডিয়াম গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত ভূমিতে। খেলা নেই। কেবল মেলাই হতো। সে সাথে ছিল অবৈধ দখলদারদের কবলে। অবশেষে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে আউটার স্টেডিয়াম। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান গত ১৯ মার্চ গুঁড়িয়ে দেন আউটার স্টেডিয়ামের চার পাশের সব অবৈধ স্থাপনা।

এর আগে তিনি এই আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে একটি পরিকল্পনা করেন। সেখানে কিভাবে আউটার স্টেডিয়ামকে আবার খেলার মাঠ হিসেবে পরিণত করা যায় সে জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। খেলার মাঠে আর মেলা হবে না এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি চট্টগ্রামের খেলোয়াড় সৃষ্টির উর্বর ভূমি আউটার স্টেডিয়ামকে আবার খেলার মাঠে পরিণত করার উদ্যোগ নেন। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথমে আউটার স্টেডিয়ামের চারপাশে ঘেরাও দেওয়া হবে। যার কাজ শুরু হবে আগামী রোববার (৭ মে) থেকে।

যদিও গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এবং সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। আগামী রোববার থেকে শুরু হবে পুরোদমে এই কার্যক্রম। আউটার স্টেডিয়ামকে কিভাবে দৃষ্টি নন্দন একটি খেলার মাঠে পরিণত করা যায় সে জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থপতি আশিক ইমরানকে। এরই মধ্যে তিনি একটি স্ট্রাকচারাল ডিজাইন তৈরি করেছেন। যেখানে দেখানো হয়েছে আউটার স্টেডিয়ামে কি কি থাকছে। এই স্থপতি জানান, প্রথমে থাকছে আউটার স্টেডিয়ামের চারপাশে সীমানা প্রাচীর। এরপর সংস্কার করা হবে মাঠ। বর্তমান মাঠের যে অবস্থা রয়েছে সেখানে আরো দুই ফুট মাটি ভরাট করা হবে। এরপর সেখানে ঘাস লাগিয়ে সেটিকে খেলাধুলার উপযোগী করা হবে।

নতুন নকশায় আউটার স্টেডিয়ামের চারপাশে মানুষ বসার জায়গা রাখা হবে। মাঠের পশ্চিম পাশে নির্মাণ করা হবে গ্যালারি। যাতে প্রায় দুইশর বেশি মানুষ বসতে পারবে। সীমানা প্রাচীরের ভেতরে মাঠের চারদিকে থাকবে ওয়াকওয়ে। আউটার স্টেডিয়ামের যে পাশে এখন মুক্ত মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে সেখানেই হবে মাঠে ঢুকার মূল প্রবেশ পথ। আর সেখানেই তৈরি করা হবে ড্রেসিং রুম এবং মাঠের উত্তর পাশে করা হবে টয়লেট ব্লক। এছাড়া মাঠের চারপাশে সবুজ বেস্টনি তৈরি করতে লাগানো হবে গাছ। যাতে একটি প্রাকৃতিক পরিবেশ পাওয়া যায়। মাঠের উত্তরপশ্চিম কোনায় মূল প্রবেশ পথ ছাড়াও মাঠের পূর্ব পাশে আরেকটি প্রবেশ পথ থাকবে। তবে সেটি ইমার্জেন্সি কাজে ব্যবহার করা হবে। সবমিলিয়ে নতুন ডিজাইনে আউটার স্টেডিয়াম হবে একটি দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা।

আউটার স্টেডিয়ামে আবার খেলাধুলা আয়োজনের জন্য মাঠ সংস্কারটি সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কিউরেটরদের দিয়ে এই মাঠ সংস্কারের কাজটি করতে চায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। যাতে খেলার উপযোগী মাঠ করা যায়। আর সে হিসেবেই এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। গতকাল তিনি বলেছেন, আউটার স্টেডিয়াম চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের অনেক বড় একটি ঐতিহ্য। যেখান থেকে আকরাম, নান্নু, আশিষ ভদ্র, তামিম, আফতাবদের মতো অনেকেই উঠে এসেছে।

এখন অবহেলায় পড়ে থাকলেও আবার আউটার স্টেডিয়ামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি। কাজ কেবল শুরু। এই কাজ যখন শেষ হবে তখন এই মাঠ হবে চট্টগ্রামের সবচাইতে সুন্দর একটি মাঠ। যেখানে আবার খেলোয়াড়দের পদচারণায় মুখর হবে। শুধু আউটার স্টেডিয়াম নয়, চট্টগ্রামের অন্য সব খেলার মাঠ গুলোকে পর্যায়ক্রমে খেলাধুলার উপযোগী করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক এবং সাধারণ মানুষ। কারণ এই মাঠে মেলা নয় খেলা দেখতে যে অভ্যস্ত চট্টগ্রামের মানুষ। এখন সবাই দেখার অপেক্ষায় কবে এই আউটার স্টেডিয়াম নতুন রূপে হাজির হয় চট্টগ্রামের মানুষের সামনে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাকরির বাজার ধরতে প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে উদাহরণ : তথ্যমন্ত্রী