চন্দ্রপৃষ্ঠে অক্সিজেন সংগ্রহের উপায় খুঁজে পেয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। চাঁদে মানব বসতি তৈরির পরিকল্পনায় এটি মার্কিন এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির জন্য বড় এক অগ্রগতি বলে বিবেচিত হচ্ছে। হিউস্টনে অবস্থিত নাসার জনসন স্পেস সেন্টার–এর এক গবেষণা দল এক পরীক্ষার মাধ্যমে কার্বথার্মাল প্রতিক্রিয়া তৈরির উদ্দেশ্যে প্রথমবারের মতো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার ব্যবহার করে একেবারে বায়ুশূন্য জায়গায় সিমুলেট করা চাঁদের মাটি থেকে সফলভাবে অক্সিজেন সরাতে পেরেছে। কার্বোথার্মাল রিডাকশন ডেমোনস্ট্রেশন (কার্ড) নামে পরিচিত এই পরীক্ষা শ্বাস–প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন উৎপাদন, এমনকি পরিবহন চালকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ইন্ডিপেন্ডেন্ট। খবর বিডিনিউজের।
আমাদের দল প্রমাণ করেছে, কার্ড নামের এই চুল্লি চন্দ্রপৃষ্ঠে টিকে থাকবে ও সফলভাবে অক্সিজেন নির্গমন করতে পারবে। –বলেন নাসার প্রকৌশলী অ্যানাস্তেসিয়া ফোর্ড। অন্যান্য গ্রহে টেকসই মানব ঘাঁটি তৈরির স্থাপত্য বিকাশের বেলায় এটি বড় এক পদক্ষেপ। চাঁদে স্থায়ী মানববসতি স্থাপন নাসার আর্টেমিস মিশনের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রাগুলোর একটি, যেটির মাধ্যমে ২০২৫ সালের শুরুতে চন্দ্রপৃষ্ঠে পুনরায় নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্যস্থির করেছে নাসা।
এই সর্বশেষ নিরীক্ষার সাফল্যের মানে দাঁড়ায়, অক্সিজেন সংগ্রহের পদ্ধতি এখন প্রস্তুতির ষষ্ঠ পর্যায়ে আছে অর্থাৎ মহাকাশে পরীক্ষার জন্য এটি প্রস্তুত আছে। চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রতি বছর নিজের ওজনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অক্সিজেন উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে এই প্রযুক্তির। ফলে, চাঁদে টেকসই মানব উপস্থিতির পাশাপাশি চন্দ্রপৃষ্ঠের অর্থনীতিও সক্রিয় হবে। —বলেন নাসার জ্যেষ্ঠ প্রকৌশল অ্যারন পাজ। এই মাসের শুরুতে চাঁদের চারপাশ ঘুরে আসার জন্য পরিকল্পিত ‘আর্টেমিস ২’ মিশনের চার নভোচারীর নাম ঘোষণা করেছে নাসা। আর এটিই এই প্রকল্পের প্রথম যাত্রিবাহী মহাকাশ অভিযান হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ১০ দিনের এই পরীক্ষায় নভোচারীদের ওরিয়ন মহাকাশযানে ভ্রমণ করতে দেখা যাবে। আর এটি উৎক্ষেপিত হবে নাসার বিশালাকারের ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস)’ রকেটের মাধ্যমে। পাশাপাশি, ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর চাঁদকে প্রদক্ষিণ করা প্রথম নভোচারী হতে যাচ্ছেন এই চারজন। এরইমধ্যে ওরিয়ন স্পেসক্রাফটের যাত্রিবিহীন ‘টেস্ট ফ্লাইট’ পরিচালনা করেছে মার্কিন এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ২০২২ সালের নভেম্বরে চাঁদের চারপাশ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে এটি।