পিবিআই প্রধানের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক ইলিয়াস পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন, বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও পিতা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া। গতকাল বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর বাসসের।
২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এদিন আদালতে এ চার্জশিট উপস্থাপন করা হবে। এ মামলার বিচার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে অনুষ্ঠিত হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামি ইলিয়াস তার ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল থেকে এসপি বাবুল আক্তারের অডিও কথপোকথন ফাঁস করেন। বাবুল আক্তারের ভাই লাবু ও বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে বাবুল আক্তারের মুক্তি চেয়ে মানহানিকর তথ্য প্রদান করেন। আসামি বাবুল আক্তারের সহযোগিতায় ওই সকল তথ্য উপাত্ত আসামি ইলিয়াসের কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তী আসামি ইলিয়াস অডিও তথ্য ফাঁস করে। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২), ২৮(২), ৩১(২) ও ৩৫(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ১০ নভেম্বর বাবুল আক্তারকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারের ভাই লাবু ও বাবা ওয়াদুদ জামিনে রয়েছে। তবে সাংবাদিক ইলিয়াস পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
বনজ কুমার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআই দেশের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তকালে প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের নাম বেরিয়ে এলে তাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু মিতু হত্যার মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত এবং পুলিশ ও পিবিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে জেলে থাকা বাবুল আক্তার ও অন্য আসামিরা দেশ–বিদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক বিভিন্ন অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন।
এরই ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তার ও অন্য আসামিদের প্রত্যক্ষ–পরোক্ষ প্ররোচনায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করেন।