রুমায় দুই গ্রুপের মধ্যে দিনভর গোলাগুলি

বান্দরবান প্রতিনিধি | বুধবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমায় পাহাড়ের সশস্ত্র দুই সংগঠনের মধ্যে গতকাল দিনভর গোলাগুলি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আতঙ্কের মধ্যে মুয়ালপি পাড়া থেকে ৪৯টি মারমা পরিবার বাড়ি ছেড়ে আসার ৫ দিনের মাথায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। এখন বম সম্প্রদায়ের মানুষও পাড়া ছেড়ে গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মনিরুজ্জামান জানান, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র দুটি সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়েছি। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি চলছে। গতকাল সকাল থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি হয়।

এদিকে সশস্ত্র দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় মুয়ালপি পাড়াসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খামতান পাড়া এলাকায় কেএনএর সাথে আরেকটি গ্রুপের গোলাগুলিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে সাতজন কেএনএর সাথে জড়িত ছিল।

বিডিনিউজ জানায়, রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুয়ালপি পাড়ায় মারমা ও বম সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। এখানে ৫০টির মতো মারমা পরিবার এবং ৮০টির মতো বম পরিবার বসবাস করে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি এই গ্রামে পৌঁছাতে হেঁটে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। ২০ এপ্রিল ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে এই পাড়া থেকে ৪৯টি মারমা পরিবার বাড়ি থেকে এসে রুমা উপজেলা সদরে মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ভবনে আশ্রয় নেয়। তখন পাড়াবাসী জানিয়েছিলেন, তাদের পাড়া থেকে দুজনকে কেএনএফ (স্থানীয়দের কাছে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত) ধরে নিয়ে যায় এবং নির্যাতন করে। পরে পাড়াবাসীর অনুরোধে ছেড়ে দেওয়া হলেও ১৮ এপ্রিল আবার ধরে নিয়ে যায়। এ নিয়ে ১৯ এপ্রিল রুমা বাজারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হলে মুয়ালপি পাড়াবাসীকে প্রাণনাশে হুমকি দিতে থাকে। ঘরে ঘরে ঢুকে দরজায় আঘাত করে। ভয়ে সবাই পালিয়ে যায়। এর মধ্যে সেখানে দুই সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।

পাইন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, আমিও গোলাগুলির ঘটনা শুনেছি। তবে সেখানে তো অনেকেই আছে। কাদের কাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সেটা জানি না। পাহাড় বাসিন্দাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাচ্ছি। হয়তো তারা পাড়া থেকে চলে গেছে। কোথায় গেছে জানি না।

পাইন্দু ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অং সা প্রু মারমা সাংবাদিকদের বলেন, গোলাগুলির ঘটনার আগেই পাড়া থেকে মারমা সমপ্রদায়ের লোকজন চলে গিয়েছিলেন। এখন বম সমপ্রদায়ের লোকজনও চলে গেছে। পাড়া খালি হয়ে গেছে, কেউই নেই। বম সম্প্রদায়ের লোকজন কোথায় গেছে এখনও জানতে পারিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে নির্বাচনী সভায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারি, আহত ৬
পরবর্তী নিবন্ধজাপানে শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা