ফেইসবুকে মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের জেরে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ২৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিশিষ্ট কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেয়া একটি পোস্ট নিয়ে সম্প্রতি একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। নিরাপত্তাহীনতায় কবি সেলিনা শেলী ফেইসবুকে দেয়া তার পোস্টটি পরবর্তীতে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপরও এই গোষ্ঠী তাকে হুমকি ধমকিসহ নানাভাবে হেনস্থা অব্যাহত রেখেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সমগ্র বিষয়টি যাচাই–বাছাই ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে তার কর্মক্ষেত্র থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং বিভাগীয় মামলা দায়ের করে।
আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, কবি সেলিনা শেলী ফেইসবুকে দেয়া পোস্টের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেননি, পবিত্র রমজান মাসের বিরুদ্ধেও তার কোনো বক্তব্য সেই পোস্টে ছিল না কিংবা ধর্মীয় মনীষীদের নিয়েও কোনো কটূক্তি তিনি করেননি।
এরপরও তিনি যেভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন, এটি একজন নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি চরম অন্যায় আচরণ বলে আমরা মনে করি। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে সেলিনা আক্তার শেলীর বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি একিউএম সিরাজুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মানবাধিকার সংগঠক নূরজাহান খান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারা আলম, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ফেরদৌস আরা আলীম, উন্নয়ন সংগঠক শিশির দত্ত, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. চন্দন দাশ, আইনজীবী অ্যাডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী, ইতিহাস গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হক, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, নাট্যজন কুন্তল বড়ুয়া, শিক্ষক হোসাইন কবির, সাংবাদিক ফারুক ইকবাল, কবি ও সাংবাদিক এজাজ ইউসুফী, সাংবাদিক রাজীব নূর, মহিলা পরিষদ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক লতিফা কবীর, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, সাংস্কৃতিক সংগঠক স্বপন মজুমদার, লেখক আহমেদ মুনির ও সুমন টিংকু, কবি আসমা বীথি, রিমঝিম আহমেদ ও ফারহানা আনন্দময়ী।
এছাড়া সম্মিলিত আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, কণ্ঠনীড়, নির্মাণ আবৃত্তি সংগঠন, বিভাষ, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র সাংগঠনিকভাবে এই বিবৃতির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে।