শৈশব হলো বড় পাঠশালা

লিপি তালুকদার | বুধবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

শৈশবের পথ পাড়ি দিয়েছি অনেক বছর হলো। তবুও মনে হয় শৈশবের দিনগুলোতে ফিরে যায়। বিকেলবেলা সাতপাতা, লুকোচুরি, কাবাডি, হা ডু ডু, ইচিংবিচিং, কুতকুত, সাতচারা, ঘিলা এইরকম নানা ধরনের খেলায় মেতে ঘরে ফিরতাম সন্ধ্যায়। নদীর চর পড়লে তাতে ফুটবল, ক্রিকেট তো চলতোই। খোলা আকাশের নীচে সবুজ মাঠ থেকে ঘরে আসতে মন চাইতো না।

সন্ধ্যা হলেই মা রসুইঘর থেকে ডাক দিয়ে বলতো ‘আওয়াজ দিয়ে পড়ো যেন আমি শুনতে পারি।’ সেই আওয়াজ করে পড়া টা যেন পাড়ার সবার ঘর থেকেই শুনা যেতো। সবার পড়ার শব্দ যেন একসুরে মাতিয়ে রাখে পাড়াটাকে।তখন লোডশেডিং হলেই মা হারিকেন জ্বালিয়ে দিত বা কেরোসিনের বাতি পড়ার জন্য।কাঁচের চিমনি দিয়ে হারিকেনের সলতের আলো এসে পড়তো বইয়ের অক্ষর গুলোতে।সে আলোর দ্যুতি অন্যরকম ভালো লাগতো। সেইসব দিনে বিনোদনের খোরাক ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন তাও আবার সপ্তাহে একটাদিন শুক্রবার দেখতে পেতাম তাতেই আনন্দের কমতি ছিল না। শৈশবের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে সবার ঘরে ঘরে যেতাম। পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন সবাই দেখা করতে আসতো তখন ফোন কল করে কেউ আসতো না বা যেতাম না সেটাই ছিল বড্ড বেশি সারপ্রাইজড। শৈশবের বন্ধু, বান্ধবীরা কেউ হারিয়ে যায় নি কিন্তু আধুনিকতা,উন্নত প্রযুক্তির ভিড়ে আন্তরিকতা নেই। নিজের শৈশব থেকে যা শিখেছি তা হয়তো বর্তমান প্রজন্মের কাছে একটা গল্পের মতো। ওদের জন্য আমরাই রেখে যেতে পারি নি সবুজ মাঠ, গ্রামীণ নানা ধরনের খেলা আরো অনেক কিছু।কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে কতকিছু নতুনকে বরন করার জন্য। নিজের শৈশবের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে শুধু বলে যায় শৈশবের মতো বড় পাঠশালা হয় না।শৈশব বেঁচে থাকুক, ভালো থাকুক আগামী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদুল ফিতর আনন্দের উৎসব
পরবর্তী নিবন্ধআল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম রমজানের তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ নামাজ