সাবেক ফরেস্টার সুলতানুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণের সাবেক ফরেস্টার মো. সুলতানুল আলম চৌধুরী ও তার স্ত্রী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম১ এর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক মামলা দুটি দায়ের করেন। দুদক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে দুই লাখ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন ফরেস্টার মো. সুলতানুল আলম চৌধুরী। যাচাই করলে দেখা যায়, তার নামে তিন লাখ ৬১ হাজার ৬৪৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। সেই হিসেবে তিনি এক লাখ ৬১ হাজার ৬৪৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। এছাড়া সুলতানুলের নামে ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫১ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পায় দুদক। একই সময়ে তিনি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ১৪২ টাকা পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যভাবে ব্যয় করেছেন। ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৫৩ লাখ ৪৪ লাখ ৫৯৩ টাকা। এর মধ্যে বৈধ হচ্ছে এক কোটি দুই লাখ ১০ হাজার ৭৫৯ টাকা। বাদবাকী ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩৪ টাকা তিনি অবৈভাবে আয় করেছেন। একইভাবে সুলতানুলের স্ত্রী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীনও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন।

তিনি দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অস্থাবর সম্পদ অর্জনের কোনো তথ্যও দেননি। অথচ সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে তার নামে দুই লাখ দুই হাজার ২৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। সেই হিসাবে উক্ত দুই লাখ দুই হাজার ২৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন তিনি। এছাড়া দেখা যায়, শাহনাজ পারভীনের নামে ৭০ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। একই সময়ে তিনি ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩১৮ টাকা পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যভাবে ব্যয় করেছেন। ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ এক কোটি পাঁচ লাখ ৯৭ হাজার এক টাকা। এর মধ্যে বৈধ আয় রয়েছে ৭১ লাখ নয় হাজার ৫৮৫ টাকা। বাদবাকী ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৬ টাকা তিনি অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।

মামলার বাদী ও দুদক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক বলেন, দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৪৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপনপূর্বক মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩৪ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মো. সুলতানুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ () ও ২৭ () ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। অন্যদিকে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ লাখ ২ হাজার ২৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদানের দায়ে ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৪ হাজার ৯৭ হাজার ৪১৬ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখায় একই আইনের একই ধারায় সুলতানুলের স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা করা হয়েছে। দম্পতির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি দুটি নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হবে বলেও জানান দুদক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহামারীর দিনে দেশে কমেছে গড় আয়ু
পরবর্তী নিবন্ধলাইলাতুল কদর : পাপে তাপে দগ্ধ মানুষের পরিত্রাণের সুযোগ