অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছা এ আদেশ দেন।
এর আগে দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে গত রোববার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর দায়রা জজের ব্যক্তিগত সহকারী দিপেন দাশ গুপ্ত আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ৩০ মার্চ মামলার সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের তৎকালীন উপ–সহকারী পরিচালক (বর্তমানে চাকরিচ্যুত) শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। তারা হলেন নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমান (গ্রাহক), কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নগরীর হালিশহরের ছোটপুল এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের নামে ১৮টি দ্বৈত চুলা ছিল। এর মধ্যে অব্যবহৃত ছিল ১২টি। দীর্ঘদিন ধরে অব্যহৃত থাকা উক্ত ১২টি দ্বৈত চুলা চান্দগাঁওয়ের সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানাস্থর করা হয়। এ কাজে মৃত সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামাও করা হয়। এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুর রহমানের নামে পৃথক ১০টি নতুন সংযোগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে পরের বছরের ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে এসব সংযোগ দেওয়া হয়। এ সময়কালে ভুয়া আবেদনপত্র তৈরির মাধ্যমে গ্রাহক মুজিবুরের নামে প্রথমে ১০টি ও পরে ১২টিসহ মোট ২২টি অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, সংযোগ স্থানান্তরের আবেদনের প্রেক্ষিতে কেজিডিসিএলের আওতাধীন হালিশহরের তখনকার উপমহাব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার সারওয়ার হোসেন নথির নোট অনুচ্ছেদের ৬–তে আবাসিক খাতে রাইজার শিফটিং নিরুসাহিত করুন মর্মে অনুমোদন না দিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর নথিটি ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীতে আবাসিক গ্রাহক মৃত এম এ সালামের পক্ষে তার স্ত্রী নুরজাহান সালামের নাম ব্যবহার করা হয়। তৎকালীন ডিজিএম প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন একে অপরের যোগসাজসে ভুয়া আবেদনপত্র ও অঙ্গীকারনামা সৃজন করেন। সার্ভেয়ার তথা জরিপকারী আসামি মো. দিদারুল আলম কর্তৃক এম এ সালামের নামে দলিল এবং আসামি মো. মুজিবুর রহমানের নামে ভিন্ন দলিল, ভিন্ন মালিকানা ও আবাসিক খাতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও জরিপ পূর্বক স্থানান্তরের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলা দায়েরের পর কেজিডিসিএলের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তারা জামিন নেন।