ফিলিস্তিনি ইতিহাস বা সংস্কৃতি বলে কিছু নেই। ফিলিস্তিনি জনগণ বলতেও কিছু নেই বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ।
অধিকৃত পশ্চিম তীর প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা এই মন্ত্রী গত রোববার ফ্রান্সে একটি সম্মেলনে এমন মন্তব্য করে নিন্দা–সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে, ফিলিস্তিনি ইতিহাস বা সংস্কৃতি কি আছে? নেই। ফিলিস্তিনি জনগণ বলে কিছু নেই। খবর বিডিনিউজের।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডাপন্থি জোটের একটি ধর্মীয়–জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান হচ্ছেন বেজালেল স্মোত্রিচ। যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের মধ্যস্থতায় মিশরে যেদিন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা রমজান মাসকে সামনে রেখে সহিংসতা কমিয়ে আনতে আলোচনায় বসেছিলেন, সেদিনই স্মোত্রিচ ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই মন্তব্যের নিন্দা করে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ সাত্তাহ বলেছেন, স্মোত্রিচের বক্তব্য সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার শামিল। স্মোত্রিচ যে পডিয়ামে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেটিও ছিল বিতর্কিত। পডিয়ামের পেছনটা ছিল বিভিন্ন আকারের ইসরায়েলি পতাকায় ঢাকা। তাতে পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম, গাজা ও জর্ডানে ইসরায়েল রাষ্ট্রের সম্প্রসারিত সীমানা চিহ্নিত করা ছিল। ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করা জর্ডান ইসরায়েলি পতাকা সজ্জিত এমন পডিয়ামে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।
এর প্রতিবাদে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকেও ডেকে পাঠানোর কথা জানিয়েছে তারা।
যদিও স্মোত্রিচের এক মুখপাত্র বলেছেন, ফ্রান্সে সম্মেলনের আয়োজকরা পতাকা দিয়ে পডিয়ামের ওই সাজসজ্জা করেছে। সেখানে স্মোত্রিচ কেবল একজন অতিথি ছিলেন।
মার্চ মাসের শুরুতেও ইসরায়েলের এই মন্ত্রী একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হন। সে সময় তিনি একটি ফিলিস্তিনি শহরকে মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এবার ফের ফিলিস্তিনিদের নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করলেন, তা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের জন্য মোটেও অনুকূল নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের উপ–মুখপাত্র ফারহান হক। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনের অধিকারকে সমর্থন করে বলে জানান তিনি। স্মোত্রিচের মন্তব্যের সমালোচনা করেছে ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররাও।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এমন কোনও কথা শুনতে চায় না। এমন কোনও কাজও দেখতে চায় না। স্মোত্রিচ যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে সেটিই হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও বলেছে, তারা আবারও স্মোত্রিচের এমন অগ্রহণযোগ্য মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। তার এমন বক্তব্য বিপজ্জনক এবং অনিষ্টকর।