আগামী বছর থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকা হবে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণার মধ্যে গতকাল বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
দীপু মনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক সবার জন্যেই হয়রানি অনেকখানি কমেছে, ব্যয় সাশ্রয়ী হয়েছে… এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যেকোনো নতুন সিস্টেম চালু করতে গেলে সেখানে কিছু কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতেই পারে, আমাদেরও সেরকম কিছু কিছু সমস্যা হয়েছে, কিছু কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলিকে কাটিয়ে উঠে আরও ভালো করবার চেষ্টা আমাদের আছে।
তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে সারা বিশ্বে যেভাবে হয়… একটি পরীক্ষা হয়… এখানেও সেরকম একটি পরীক্ষা হবে, সকল বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে অংশ নেবে এবং সেই একটি পরীক্ষার মাধ্যমেই একটা জাতীয় মেধা তালিকা হবে। তার ভিত্তিতেই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
এর আগেও দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছিল। ২২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা; সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ কৃষি ভর্তি পরীক্ষা হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় রাজি হয়নি। ইতোমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে না যাওয়ায় স্বকীয়তা রক্ষার্থে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আইনুল ইসলাম জানান।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। এ সময় দীপু মনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিংয়ের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, এখনও পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই কিন্তু সবাই চাওয়া সত্ত্বেও এবং বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন থাকা সত্ত্েবও র্যাগিং কোথাও না কোথাও এখনও চালু আছে, বিভিন্নভাবে হয়। অনেক শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস হয়ে যায়, এটি নিশ্চয়ই কারো কাম্য নয়।
এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের বিরাট ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। র্যাগিং একেবারেই নিষিদ্ধ এবং সরকার সেটা বন্ধ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; এটা অন্যান্য সামাজিক সমস্যার মতোই একটা সমস্যা। এটা আইন করে বা শিক্ষকদেরকে দিয়ে বল্লেই হয়ে যাবে এমনটা নয়। এর বিরুদ্ধে একটা মানসিকতা ও সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে বলে তিনি মনে করেন এবং সবাইকে নিয়ে কাজ করলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করেন।