সম্পর্ক পুনর্স্থাপনে সৌদি আরব ও ইরানের আকস্মিক চুক্তি তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে লাগাম টানার সম্ভাব্য পথ আর ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতের সুযোগসহ যুক্তরাষ্ট্রকে কৌতূহলী হয়ে ওঠার অনেক উপাদানই দিচ্ছে।
এতে আরও একটি উপাদান আছে, যা ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের ব্যাপক অস্বস্তিতে ফেলেছে। সেটি হল– শান্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের ভূমিকা, তাও এমন এক অঞ্চলে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রভাবের কথা সুবিদিত।
বেইজিংয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে চারদিনের আলোচনার পর গত শুক্রবার এ চুক্তির ঘোষণা আসে; চুক্তির আগে ওই আলোচনার খবর প্রকাশ্যে আসেনি। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত না থাকলেও, সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়মিতই মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছে। খবর বিডিনিউজের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্য থেকে শুরু করে গুপ্তচরবৃত্তিসহ নানান ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্রমাগত তিক্ত হয়েছে। দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি নিজেদের সীমানা থেকে অনেক দূরে প্রভাব বিস্তার নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেতেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জেফরি ফেল্টম্যানের মতে, ছয় বছর পর একে অপরের দেশে দূতাবাস খুলতে ইরান–সৌদি আরবের রাজি হওয়ার চেয়েও চীনের ভূমিকাই এই চুক্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক বলে মনে হচ্ছে। এটি ব্যাখ্যা করা হবে বাইডেন প্রশাসনের গালে চপেটাঘাত ও চীনের উত্থানের প্রমাণ হিসেবে, যা সম্ভবত সঠিকই হবে।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব : চুক্তি স্বাক্ষরে চীনের সংশ্লিষ্টতা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ‘বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে’ বলে মনে করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দূতের দায়িত্ব পালন করা ড্যানিয়েল রাসেল। এতকিছুর পরও ইরান–সৌদি চুক্তিতে বেইজিংয়ের সংশ্লিষ্টতা চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তিসামর্থ্য ও প্রভাবের বিষয়টিই দৃষ্টিগোচর করছে, যা একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি যে সঙ্কুচিত হচ্ছে, সেই আখ্যানকেই শক্তিশালী করছে, বলেছেন ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জন অল্টারম্যান।












