নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেও প্রবেশপত্র না পাওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রাম কাস্টমস।। জেলা কোটার প্রাপ্যতা না থাকায় প্রবেশপত্র ইস্যু হয়নি বলছেন কাস্টমস কর্তারা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৯ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকের পরীক্ষায় চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার প্রার্থীদের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু না হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্দিষ্ট কোনো জেলা নয়, নিয়োগবিধি অনুযায়ী কোটা প্রাপ্যতা হিসেব করে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। যেসব জেলার কোটা পূরণ হয়ে গেছে, সেই জেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ২০টি পদের বিপরীতে ২৬১ জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেই সময় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিশোরগঞ্জ জেলা ব্যতীত সকল জেলার লোক আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ছয়টি পদের বিপরীতে ১৯৫ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আবার প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল ও বরগুনা জেলা ব্যতীত সকল জেলার লোক আবেদন করতে পারবেন। তবে বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, যারা ২০১৪ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করেছেন এবং যাদের বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে, তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপকমিশনার ও বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ৪ হাজার ৯৭৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। ২০১৪ ও ২০১৭ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সকল জেলা কোটা অনুযায়ী হিসেব করে আমরা বৈধ প্রার্থীদের কাছে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র প্রেরণ করি। এখানে কোন জেলা কি পরিমাণ কোটা পাবে সেটি হিসেব করা থাকে। মনে করুন, কাস্টমসের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর জনবল কাঠামোতে ৩০০ লোক লাগবে। এখন কোটার হিসেব হয়, জেলার মোট জনসংখ্যা অনুযায়ী। ঢাকার জেলার জনসংখ্যা মনে করুন বেশি, তাই সেখানে যদি ১০ শতাংশ কোটা হয়, নিয়ম মতে নিয়োগ পাবে ৩০ জন। এখন আগে থেকেই যদি কাস্টমসে ২৫ জন কর্মরত থাকে, তবে আমরা নিয়োগ দিতে পারি ৫ জন। আবার যদি ৩০ জনই কর্মরত থাকে, তবে আমরা একজনকেও নিতে পারবো না। এটি সব জেলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কোনো নির্দিষ্ট জেলার প্রার্থীদের উদ্দেশ্যমূলক প্রবেশপত্র ইস্যূ না করার অভিযোগ সঠিক নয়। আমি নিজে ৫৯ জেলার প্রার্থীদের প্রবেশপত্র ইস্যু করেছি। এখানে আরেকটি বিষয় হলো২০১৪ থেকে ২০২০ পর্যন্ত দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে মহামান্য হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের আদেশ মতে, বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হয়। সে কারণেও জেলা কোটার প্রাপ্যতা শেষ হয়ে যায়।

জামালপুর জেলার প্রার্থী মোহাম্মদ আসিফ বলেন, আমি ২০১৪ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সিপাহী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউার মুদ্রাক্ষরিক পদে আবেদন করি। এরমধ্যে সম্প্রতি শেষ হওয়া সিপাদী পদে আমার নামে প্রবেশ পত্র আসলেও অফিস সহকারী কাম কম্পিউার মুদ্রাক্ষরিক পদে প্রবেশপত্র আসেনি। স্বভাবত আমি হতাশ হয়ে পড়েছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় করে আছি। আবেদন করেছি, তাই মনে করি পরীক্ষা দেয়া আমার অধিকার। তবে এখন শুনছি, কোটার প্রাপ্যতা নাই। এই বিষয়গুলো তো আমাদের জানাতে হবে।

উল্লেখ্য, আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নগরীর জাকির হোসেন রোডের ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেইলি ব্রিজ ভেঙে নদীতে পাথর বোঝাই ট্রাক
পরবর্তী নিবন্ধচবির প্রথম নারী সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ