গতকাল সন্ধ্যায় রেডিসন ব্লুতে যখন টি–টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি উন্মোচন করছিলেন বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের অধিনায়ক তখন সাকিবের মুখের হাসিটা কিছুটা হলেও যেন চওড়া দেখাচ্ছিল। অবশ্য তার কারণও আছে। যদিও টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ইংলিশদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে আজ বৃহস্পতিবার। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুপুর তিনটায় শুরু হবে এ ম্যাচ।
দুই দিন আগে কঠিন এক পরিস্থিতির মুখে পড়েও ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে যেভাবে ইংলিশদের হারিয়েছে তাতে দলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে দারুণভাবে। তবে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট বলে ভিন্ন কথা। আর ইংলিশরা এই টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটটা খেলে একেবারে দানবীয়ভাবে। তাই ভয়ের কারণ থাকলেও লাকি গ্রাউন্ড চট্টগ্রামে নতুন করেই যেন শুরুটা করতে চান সাকিব আল হাসান। যদিও সাকিব এই দলে পাচ্ছেন না দেশের সবচাইতে অভিজ্ঞ তিন তারকা তামিম, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহকে। কারণ এই তিন জনই টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন। তাই নতুন এক দল নিয়ে নতুন শুরুর প্রত্যাশা সাকিবের। যদিও টি–টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। শুধু তাই নয় বর্তমান বিশ্বে যে কয়জন ক্রিকেটার সবচাইতে ভয়ংকর টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে থাকেন তারা প্রায় সবাই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার। তারপরও ভয় পাওয়ার কিছু দেখছেন না সাকিব। বরং প্রথম সিরিজের শুরুটা জয় দিয়েই করতে চান টাইগার দলপতি।
২০০৬ সালে টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটের যাত্রা শুরুর পর থেকে এরই মধ্যে ১৪৪টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র একবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। আর সেটা ২০২১ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। যদিও সে ম্যাচের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয় টাইগারদের জন্য। কারণ ম্যাচটি হেরেছিল বাংলাদেশ ৮ উইকেটে। তবে ওয়ানডে সিরিজে যেভাবে দুই ম্যাচে হেরে দেওয়ালে পিট ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে ফিরেছে সাকিবরা সেই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে টি–টোয়েন্টি সিরিজেও ভাল শুরু করতে চায় স্বাগতিকরা। সদ্য বিপিএলে পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ দলে। আর সবার মাঝে ভালো খেলার একটি তাড়না যেন কাজ করছে প্রবলভাবে।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটটা খুব বেশি ভাল খেলেনা বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানও অবশ্য সে কথা বলে। ১৪৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মাত্র ৪৯টি জয় টাইগারদের। হার ৯২টি। তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। কাজেই পরাজয়টা জয়ের প্রায় দ্বিগুন। ক্রিকেট কখনো কখনো পরিসংখ্যানের ধার ধারে না। তাই আশাবাদের জায়গাটা বেশ ভালভাবেই খুঁজে পাচ্ছেন সাকিব। যদিও বাংলাদেশ এই সিরিজটাকে দেখছেন ভাবিষ্যতের দল গঠনের মঞ্চ হিসেবে। কারণ ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য এখন থেকেই শক্তিশালী দল তৈরি করাই মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের। আজকে যে তরুণদের নিয়ে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে আজ টাইগাররা তাদের নিয়েই হয়তো ২০২৪ বিশ্বকাপে যাবে বাংলাদেশ। তাই সিরিজ জয়ে চাইতেও তাদের গড়ে তোলাটাই যেন মূল লক্ষ্য টাইগার শিবিরের।