১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯ মিনিট দৈর্ঘের যে কালজয়ী ভাষণ দেন সে ভাষণটিই ছিল মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই একটি ভাষণই বাংলার জনগণকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল। লক্ষ লক্ষ মুক্তিপাগল জনতার সামনে দাঁড়িয়ে যে ভাষণ বঙ্গবন্ধু সেদিন দিয়েছিলেন তা আজ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ নয় বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে বাংলাদেশের জন্য আনন্দ এবং গৌরব বয়ে এনেছে। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ওয়াল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ অর্থাৎ বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সেদিন তীব্র ব্যাকুলতাভরা যে স্বপ্ন আশা আকাঙ্খা নিয়ে বাংলার জনগণ ছুটে গিয়েছিল সে স্বপ্ন পূরণের বার্তাই যেন প্রতিটি বাক্যে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভাষণের প্রতিটি শব্দ বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেছিলেন নিজের বিশ্বাস এবং ভালোবাসা থেকে। বাঙালির প্রতি কতটুকু ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর ছিল তা সাতই মার্চের ভাষণে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। ভাইয়েরা আমার বলে বক্তব্য শুরু করে জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করেন। বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য ছিল তাঁর আন্দোলন সংগ্রাম। বাংলার মানুষ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক মুক্তি লাভ করবে সেটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনের উদ্দেশ্য এবং স্বপ্ন এবং সে বার্তাই সাতই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন। বাঙালিকে মুক্তিসংগ্রামের প্রস্তুতির জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী একজন নেতা। তিনি সরাসরি বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করেননি। কৌশল অবলম্বন করলেন। তাঁর কৌশলী শব্দ উচ্চারণে বাংলার জনগণ পেল স্বপ্নের ঠিকানা এবং পাকিস্তানি শাসকরা গেল পিছু হটে। এজন্যই বঙ্গবন্ধু একজন আদর্শ নেতা। তাইতো বঙ্গবন্ধু বাংলার আঙিনা ছাড়িয়ে হয়ে উঠেন বিশ্ববন্ধু। বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চেতনা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মধ্যে।