বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের ভোটাধিকার আদায় করেছিলেন

চট্টগ্রামে জাতীয় ভোটার দিবসে বক্তারা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

ভোটার হব নিয়ম মেনে, ভোট দিব যোগ্যজনে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও ৫ম ভোটার দিবস উদযাপন করেছে জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়। গতকাল সকাল ১০টায় সার্কিট হাউজ চত্বর থেকে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন কার্যক্রমের শুরু করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতীয় ভোটার দিবস পালন করছি দেশের মানুষকে সচেতন করার জন্য। এই ভোটাধিকার আদায়ের জন্য আমাদের পূর্ব পুরুষরা কতো কষ্ট করেছেন সেটা নতুন প্রজন্ম জানে না। একটা সময় সাধারণ মানুষের কোনও ভোটাধিকারও ছিল না। মোগল আমল, বৃটিশদের শাসন আমল পরে আয়ুব খানের পতন শেষে ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসনের মধ্যে একটা জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি লিগেল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার নামে একটা ধারা চালু করেন। তখন সে অর্ডারে উল্লেখিত বিষয়গুলো পড়ে কোনও রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সাহস করেনি। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তার দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। বঙ্গবন্ধু সে নির্বাচনে শর্ত দিয়ে বলেছিলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন সংখ্যা বণ্টন করতে হবে এবং এক ব্যক্তির ১ ভোট নিশ্চিত করতে হবে। আজকে দেশের মানুষের এই যে ভোটাধিকার সেটা আদায় করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সুতরাং আজকের জাতীয় ভোটার দিবস পূর্বপুরুষদের অনেক কষ্টের ফসল।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এম এ মাসুদ, জেলাপ্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ প্রেস ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

র‌্যালি শেষে আলোচনা সভায় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান উপস্থিত সকলকে ভোটার হালনাগাদের নিয়মাবলী সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, সারাদেশে ২০ মে ২০২২ হতে ৪টি ধাপে ভোটার তালিকা হালনাগাদ সম্পন্ন হয়েছে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে এবং ইতোপূর্বে যারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হননি, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ৩ বছরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে যাদের জন্ম ১ জানুযারি, ২০০৫ বা তার পূর্বে, তাঁরা ২ জানুয়ারি ২০২৩ সালে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৬ বা তার পূর্বে তাঁরা ২ জানুয়ারি ২০২৪ সালের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়াও যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে তাঁরা ২ জানুয়ারি ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে হিজড়াদের হিজড়া হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়েছে। এ সময় তিনি সকলকে আশ্বস্থ করে বলেন, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের নাগরিকদের হাতে স্মার্ট আইডি কার্ড তুলে দিতে যে কোনও প্রকার সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।

বক্তারা বলেন, আমাদের চেতনা কি, নাগরিক হিসেবে আমরা নিজেদের কোথায় নিতে চাই, সেটা নির্ভর করে নির্বাচনে আমরা কাকে নির্বাচন করছি। গণতান্ত্রিক নিয়মে একজন জেলা প্রশাসাক কিংবা রাস্তার পাশের পান বিক্রেতার ভোটের মূল্য সমান। সুতরাং আমরা নিজেরা সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সকল শ্রেণি পেশার নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। যেন আমরা সকলে মিলে মনের খুশি মত, একজন যোগ্য মানুষকেই ভোট দিয়ে নির্বাচন করি।

উল্লেখ্য, জাতীয় ভোটার দিবসের দিন সারাদেশের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার ১৫ উপজেলার চূড়ান্ত ভোটার তালিকা গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫৪জন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই ভোটার তালিকায় অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্বিতীয় দিনেও অর্ধেকের বেশি টিকিট অবিক্রিত
পরবর্তী নিবন্ধস্ত্রীর মামলায় আলোচিত এসপি ফারুকী বরখাস্ত