এবার ৩ কোটি টাকার বই বিক্রি

হতাশ প্রকাশকরা, নানা অভিযোগ শেষ হলো বইমেলা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১ মার্চ, ২০২৩ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

পর্দা নেমছে ২১ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা২০২৩ এর। এবার বিক্রি হয়েছে মাত্র দুই কোটি ৯৫ লাখ টাকার বই। যা গতবারের চেয়ে দুই কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা কম। গতবার বিক্রি হয়েছিল পাঁচ কোটি ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বই।

এবার বিক্রি কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রকাশকরা। এজন্য মেলার প্রচারণা কম করা, মেলা মঞ্চে প্রতিদিন আয়োজন না থাকা, দেশের খ্যাতিমান সাহিত্যিক ও বক্তাদের আমন্ত্রণ না জানানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন তারা। প্রকাশকরা বলছেন, মেলামঞ্চে প্রতিদিন আয়োজন থাকলে দর্শক সমাগম বাড়ে। অনুষ্ঠান দেখতে আসা লোকজন ঘুরতে ঘুরতে বইও কিনে।

ঢাকা থেকে আসা সৃজনী প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী কুদ্দুস সাদী দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। শুক্রবার ও শনিবার মোটামুটি বিক্রি হয়েছে। এ দুইদিন ১০ হাজার টাকা মতো বিক্রি হয়েছে। এর বাইরে ২১ ফেব্রুয়ারি কিছুটা প্রত্যাশা পূরণ হয়, ওইদিন ১৭ হাজার টাকা বিক্রি হয়। অন্য দিনগুলোতে এমনও হয়েছে হোটেলের ভাড়াও উঠেনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মেলামঞ্চের আয়োজনও দুর্বল। ভালো শিল্পী আসলে দর্শক বাড়তো। পাবনার বইমেলায় দেখেছি ভালো শিল্পী আসায় লোক আসে। চট্টগ্রামে প্রচারণাও দুর্বল ছিল। তার দাবি, ঢাকা থেকে আসা স্টলগুলো ৯০ ভাগের লস হবে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো পুষিয়ে নিতে পারবে।

প্রথমার সাইদ আল সোহেল বলেন, প্রত্যাশার ৭৫ শতাংশ পূরণ হয়েছে। ম্যানেজমেন্টের দুর্বলতা ছিল। ইউপিএল এর শংকর দাশ বলেন, গতবারের চেয়ে কম সাড়া পেয়েছি। লাস্ট দুইদিন মানুষ কম আসছে। ২১ ফেব্রুয়ারির চেয়েও গতকাল (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেশি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

দ্বিমত থেকে ৩১টি বই বের হয়। প্রকাশনারটির ম্যানেজিং পার্টনার হোসাইন জাহিদ বলেন, প্রথমবার অংশ নিই। প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। পুরো মেলায় তিনটি শুক্রবারে মোটামুটি বিক্রি হয়। সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু বলেন, মেলা জমেছে। প্রচুর লোক এসেছে। বিক্রিও ভালো।

এদিকে গতকাল মেলার শেষদিন খড়িমাটি থেকে বের হয় হিমেল মাহমুদের উপন্যাস ‘জায়গির’। জায়গিরের কেন্দ্রীয় চরিত্র আকাশ। সে স্কুল পড়ুয়া ছেলে, তবে এটি মোটেও কিশোর উপন্যাস নয়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান আকাশকে খাবার ও আশ্রয়ের জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে থাকতে হয়। বিনিময়ে সে সকালবিকাল বাড়ির শিশুদের পড়ায়। তবে বিষয়টি এতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বাড়ির নারীপুরুষদের কাছে নানাভাবে যৌন লালসার শিকার হতে হয় তাকে। এই প্রেক্ষাপট নিয়েই জায়গির।

নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে এবার বইমেলা শুরু হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। মেলার আয়োজক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। তবে চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাহিত্যিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্য শিল্পসাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরাই সম্মিলিতভাবে এ মেলা বাস্তবায়ন করে। এবার ১০৮ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ১৪০টি স্টল ছিল।

উল্লেখ্য, জিমনেশিয়াম মাঠে ২০১৯ সাল থেকে বইমেলা হয়ে আসছে। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে ২১ দিনে ১৩ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। ২০২০ সালে চট্টগ্রামে ২০ দিনে ১৮ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। ২০২১ সালে করোনার অজুহাতে বইমেলা হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফের ইয়াবা কারবারি শাহ আলম কারাগারে
পরবর্তী নিবন্ধব্রিজঘাট বাজার ইজারা না দিতে সিডিএর চিঠি