প্রতারণা করে ভাগনির ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মামা গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

ব্যাংক হিসাবের সই জাল করে ভাগনির শেয়ার স্থানান্তরের মাধ্যমে ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মামা ছালেহ মুহাম্মদ আবু ফয়েজকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জিইসির মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ছালেহ মুহাম্মদ আবু ফয়েজ রাঙ্গুনিয়া থানার মরিয়ম নগর এলাকার মৃত মুমিনুল হকের ছেলে। তিনি বর্তমানে পরিবার নিয়ে চান্দগাঁও থানার আল আমিন বাড়িয়া দরবার শরীফ রোড এলাকায় বাস করেন।

প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ মামলার আসামি আবু ফয়েজকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) আলী হোসেন আজাদীকে বলেন, ভাগনির প্রায় ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি মামলা হয়। সেই মামলার তদন্ত পর্যায়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। মামলার তদন্ত পর্যায়ে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। মামলার বাদী সেলিনা আক্তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার বাবা মৃত আবদুস ছালাম এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর তারা ভাইবোন বাবার শেয়ারের হিসাব অনুযায়ী মালিক হন। বাদী স্বামীর সঙ্গে দুবাই প্রবাসী এবং বাদীর ভাই পাইলট হওয়ার কারণে মামা ছালেহ মুহাম্মদ আবু ফয়েজকে এনসিসি ব্যাংকের অথরাইজড পরিচালক মনোনীত করেন। সেই সুবাদে আসামি বাদীর নামে ব্যাংক হিসাব খোলেন। ওই ব্যাংক হিসাবে বাদীর ঠিকানা ও নাম ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা দেওয়া হয়েছে আসামির। এই কারণে বাদীর অজান্তেই ব্যাংক লেনদেনের সুযোগ অর্জন করে। এছাড়াও বাদীর নামে লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটি, নাসিরাবাদ শাখা ও ইস্টার্ন ব্যাংক, পাঁচলাইশ শাখায় হিসাব খুলেন। ওই হিসাবগুলোর মাধ্যমে শেয়ার, শেয়ারের স্থানান্তর ও লভ্যাংশ গ্রহণ করেন।

বাদী আরও বলেন, আমি বিদেশ থাকার সুবাদে আসামি নিজের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে আমার অজ্ঞাতসারে জালজালিয়াতির মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে শেয়ার স্থানান্তর করে আসছে। বিষয়টি আমি টের পাইনি। শুধু টাকা আত্মসাৎ নয়, লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটিজ থেকে আমার নামে ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে আমার শেয়ারের বিপরীতে প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে ঋণের কিস্তি শোধ হচ্ছিল। এখনো প্রায় ৬১ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটিজে।

টাকা আত্মসাতের বিষয়টি কখন টের পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি বিদেশ থেকে ফিরে নিজের আয়কর দাখিলের জন্য যখন এনসিসি ব্যাংক থেকে শেয়ারের তথ্য সংগ্রহ করতে যাই, তখনই জানতে পারি, আমার নামে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজে ঋণ রয়েছে। তাই এনসিসি ব্যাংকের শেয়ারের লভ্যাংশ ঋণের কিস্তি হিসেবে সমন্বয় হচ্ছে। এরপর ব্যাংক থেকে তথ্য নিতে গিয়ে এনসিসি ব্যাংক, লঙ্কা বাংলা সিকিউরিটিজ এবং ইস্টার্ণ ব্যাংক থেকে তথ্য পাই। তিনি আরও বলেন, আপন মামা হওয়ার কারণে পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। তিনি প্রথমে দোষ স্বীকার করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করেন। কিন্তু পরে টাকা ফেরত দেননি। এই কারণে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসীর গুলিতে নারী নিহত
পরবর্তী নিবন্ধচেয়ারম্যান লেয়াকতের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর