ফুলের মঞ্জুরিতে মালা গাঁথার দিন বসন্ত কেবল প্রকৃতিকেই রঙিন করেনি, আবহমান কাল ধরে রঙিন করেছে বাঙালি তরুণ-তরুণীর প্রাণ। তাই আজ পহেলা ফাল্গুনের এ দোলা জাগানো দিনে নগরীর পাহাড়তলীর শেখ রাসেল পার্কে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের আয়োজনে বসন্ত উৎসবে তরুণীরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশ ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তি রঙ শাড়ি আর তরুণরা পাঞ্জাবি-পায়জামা কিংবা ফতুয়ায় খুঁজে নেয় শাশ্বত বাঙালিয়ানা।
একুশে পদকপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন ওস্তাদ আজিজুল ইসলামের বংশীবাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রভাতী অধিবেশন। এরপর বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি সোহেল আনোয়ারের একক আবৃত্তি পরিবেশনায় প্রকৃতিতে বসন্তের নানান রঙ আরো বর্ণিল হয়ে উঠে। তারপর দলীয় সঙ্গীতে বসন্তের দ্বার জাগ্রত করে সংগীতভবন, অভ্যুদয়, সুরপঞ্চম ও ধ্রুপদ সংগীত নিকেতন।
দলীয় নৃত্যে ফাগুনের রঙিন ক্ষণ ছন্দে আনন্দে দোলায়িত করে দ্যা স্কুল অব ক্লাসিকাল ডান্স, ওডিসি এন্ড ট্যাগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, নৃত্যরূপ একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা। প্রভাতি অধিবেশনে একক সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী শ্রেয়সী রায়, সমরজিৎ রায়, রিষু তালুকদার, মাহবুবুর রহমান সাগর, সুপ্রিয়া শীল, সুব্রত ধর, রিমি সিনহা ও ঈশা দে। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।
কথামালা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক প্রণব বল, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম-এর চট্টগ্রাম ব্যুরো ইনচার্জ মিন্টু চৌধুরী, সাংবাদিক ডেইজি মওদুদ, নাট্যজন শুভ্রা বিশ্বাস, মো. সাজ্জাদ, বোধনের সভাপতি সোহেল আনোয়ার, সহ-সভাপতি সুবর্ণা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আবদুল আজিজ।
এসময় বক্তারা বলেন, বাঙালি যে উৎসবপ্রিয় তার প্রমাণ মিলেছে আজকের এ বসন্ত উৎসবে। আমরা আজ করোনাকে জয় করে পথে হাঁটছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে আগামীতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিকালের অধিবেশন। এরপর যন্ত্রসঙ্গীতে অংশ নেয় ভায়োলিনিস্ট চিটাগং। পরে কখনো সমবেত সঙ্গীত, কখনো একক গানের পাশাপাশি, নাচ-গানে পুরো অনুষ্ঠান প্রাণময় হয়ে ওঠে বোধনের সদস্যদের রঙ খেলায়। এতে বাড়তি রসদ জুগিয়ে দেয় দীপক দাশের নেতৃত্বে ঢোলবাদকরা।
উৎসবে উপস্থাপনায় ছিলেন মৃন্ময় বিশ্বাস, অনুপম শীল, শ্রাবণী দাশ, শুভাগত বড়ুয়া, সাজ্জাদ হোসেন, অন্যান্য পাল, মৃণালিনী দেবী, শ্রাবণী বণিক, ইভান পাল, ফারজানা চৌধুরী, ইসমত ফারজানা।