বান্দরবানের রুমায় দুর্গমাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট(কেএনএফ)-এর সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে।
এদিকে, কেএনএফ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে ভয়ে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে শিশুসহ বম ও মারমা জনগোষ্ঠীর ৪০ জন রুমার পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের টেবিল পাহাড়ের অদূরে দুর্গমাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ-এর সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে।
কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনাগুলো ঘটেছে। তবে আজ শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তা বাহিনী এবং কেএনএফ-এর মধ্যে গোলাগুলিতে কয়েকজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর গুঞ্জন শোনা গেছে। এসময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনী কয়েকজন সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে হতাহতের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ সদস্যরা পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারি সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসে। পরে তাদের রুমা সদরে নিয়ে আসা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বলেন, “সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত ফসল আদা-হলুদ এবং বিভিন্ন ফলন তুলতে পারছে না গ্রামবাসী। পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মুয়ালপি পাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারি সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে রুমা সদরে পালিয়ে এসেছে। তাদের বর্তমানে মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় দিয়েছি। পালিয়ে আসাদের মধ্যে মারমা এবং বম জনগোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে। কয়েক দিন আগে এক পাড়াবাসীকে পিটিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, “কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। কয়েক দিন ধরেই চলমান গোলাগুলির ঘটনা এবং সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাড়াবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে রুমা সদরে চলে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাওয়ার ও ক্লাবঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, “পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তার বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারি সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসে। পরে সেখান থেকে তাদের রুমা সদরে নিয়ে এসে ক্লাবঘরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”