পার্বত্য অঞ্চল রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে গঠন করা হচ্ছে নতুন ব্যাটালিয়ন ‘মাউন্টেন পুলিশ’। স্থানীয় অপরাধের পাশাপাশি পাহাড়ে সন্ত্রাসী সংগঠনের তৎপরতা, মাদক ও চোরাচালান ঠেকাতে কাজ করবে মাউন্টেন পুলিশ। এই ব্যাটালিয়নের ক্যাম্পও করা হবে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বর্ডারগার্ড, জেলা পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়নের পাশাপাশি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কাজ করে। এবার আর্মড পুলিশের অধীনে নতুন একটি বিশেষায়িত ইউনিট ‘মাউন্টেন পুলিশ’ গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘মাউন্টেন পুলিশ’ গঠনে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে এ বাহিনী গঠনের কাজ পুরোদমে শুরু করা হবে।
তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা হবে। ১৮ এপিবিএন রাঙামাটি, ১৯ এপিবিএন বান্দরবান ও ২০ এপিবিএন খাগড়াছড়িতে গঠন করা হবে বলেও জানায় সংশ্লিষ্টরা।
পার্বত্য এলাকার জেলাগুলোর কর্মকর্তারা জানান, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলাগুলো দুর্গম এলাকা হওয়ায় থানা পুলিশের সদস্যদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এসব এলাকায় গাড়িতেও যাতায়াত নেই। স্থানীয় অপরাধসহ পাহাড়ে নিত্যনতুন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সন্ত্রাসী গ্রুপের অপতৎপরতা, মাদক ও চোরাচালান ঠেকানো স্থানীয় থানা পুলিশের মাধ্যমে পুরোপুরি সম্ভব নয়।
পুলিশের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন পাহাড়ের এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্যাম্প তৈরি করে দায়িত্ব পালন করলে পাহাড়ে নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় হবে বলেও জানান তারা।
এপিবিএনের ডিআইজি (অপারেশন) মাহবুব আলম জানান, সীমিত পরিসরে কাজ শুরু করেছে মাউন্টেন পুলিশ। তাদের মূল কাজ হবে পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসী গ্রেফতার, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, জঙ্গিদের কাজ মনিটর ও নিয়ন্ত্রণ করাসহ পার্বত্য অঞ্চলের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
নতুন এই ইউনিটের প্রধান হবেন একজন ডিআইজি। এ ছাড়াও পাঁচ অতিরিক্ত ডিআইজি, ১১ জন পুলিশ সুপার, ২১ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২১ জন সহকারী পুলিশ সুপার, চারজন মেডিকেল অফিসার, ৭১ জন পরিদর্শক, ২৪৭ জন উপপরিদর্শকসহ মোট ২ হাজার ৬৫০ জন জনবল নিয়ে কাজ করবে নতুন এ মাউন্টেন পুলিশ ইউনিট।
নতুন ব্যাটালিয়নের কিছু কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে কার্যক্রম শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। এই ব্যাটালিয়নে নিয়োগ দেয়া পুলিশ সদস্যদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দেয়াসহ পাহাড়ে প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান ’মাউন্টেন পুলিশ’ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।