যাত্রা শিল্পে ৫৭টি বসন্ত তাঁর পার হয়েছে। ২১টি যাত্রাদলের সঙ্গে কাজ করেছেন। অভিনয় করেছেন ১৫১টি পালায়। যাত্রা শিল্পের সুসময়– দুঃসময়কে উপজীব্য করে তাঁর ১১ টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি মিলন কান্তি দে। যাত্রাশিল্প তথা অভিনয় শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবছর তাঁকে বাংলা একাডেমি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
দৈনিক আজাদীকে তিনি বলেন, যাত্রা হচ্ছে সংস্কৃতির এক বিশাল বাহন। যুগ যুগ ধরে এ শিল্পটি অবহেলিত। যাত্রাশিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আমার এ সংগ্রাম। তিনি বলেন, যেকোন পুরস্কার প্রাপ্তি চলার পথকে মসৃণ করে, জাগিয়ে রাখার প্রেরণা যোগায়। পুরস্কার পাব ভেবে কিন্তু ৫৭ বছর ধরে যাত্রাকে শিল্পের মর্যাদায় উন্নীত করার সংগ্রাম করে যাই নি।
এ পর্যন্ত দেশের স্বনামধন্য পত্রিকাগুলোতে যাত্রাশিল্প নিয়ে আমার দুই শতাধিক কলাম বেরিয়েছে। ১১ টি বই লিখেছি। ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট হলে প্রথম যাত্রা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছিলাম আমি। তখন আমি ২৫ বছরের তরুণ। যাত্রা নিয়ে কোনো স্বপ্ন দেখেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব স্বপ্নই যাত্রা নিয়ে। যাত্রাশিল্প বাঁচলেই আমার শান্তি। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন এই খ্যাতিমান অভিনেতা।
তিনি জানান, ১৯৫৮ সালে প্রথম রূপবান যাত্রাপালায় রহিম চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমায় যাওয়ার ইচ্ছা থেকেই ১৯৬৬ সালে পরিচালক সুভাষ দত্তের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সব শুনে এক বছর যাত্রাপালায় লেগে থাকার পরামর্শ দিলেন; সেই শুরু। বরিশালে গিয়ে বাবুল যাত্রা পার্টির মালিক মোজাফফর সিকদারের দলে পেটে–ভাতে যাত্রাশিল্পে ভিড়ে যান। বাবুল যাত্রা পার্টি থেকে চট্টগ্রাম এসে ১৯৬৭ সালে বাবুল অপেরায় যোগ দেন। এরপর একে একে নবারুণ নাট্য সংস্থা, বলাকা অপেরা, নিউ গণেশ অপেরা, সত্যনারায়ণ অপেরা, নবপ্রভাত অপেরা, প্রগতি নাট্য সংস্থা, চারনিক নাট্যগোষ্ঠী, তুষার অপেরা বা নিউ বাসন্তী অপেরায় কাজ করেন। কখনো শিল্পী, কখনো সংগঠক, কখনো নির্দেশক, কখনোবা পালাকার হিসেবে কাজ করেন।












