কক্সবাজার সৈকতে ডিম পাড়তে এসে আবারও প্রাণ হারাল মা কাছিম। আজ বুধবার ভোরে কবিতা চত্বর পয়েন্ট সৈকতে পড়ে থাকতে দেখা যায় একটি অলিভ রিডলি জাতের মৃত কাছিম।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট(বোরি)-এর বিজ্ঞানীরা কাছিমটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে সংরক্ষণ করেছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
তিনি বলেন, “রিডলি জাতের স্ত্রী কচ্ছপেরা হাজার মাইল অতিক্রম করে প্রতি বছর একই সময়ে ও স্থানে দলে দলে এসে বাসা বাঁধে এবং সৈকতে ডিম পাড়ে, এরপর সাগরে চলে যায়। রিডলি সামুদ্রিক কাছিমের এই অনন্য আচরণ সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীদের কাছে এক আশ্চর্য ঘটনা। এই ঘটনাটি রিডলি কাছিমের ‘অ্যারিবদা’ হিসাবে পরিচিত। হয়তো কাছিমটি কক্সবাজার সৈকতে ‘অ্যারিবদা’য় এসে সামুদ্রিক জালে আটকা পড়ে মারা যায়।”
সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, মৃত কাছিমটি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এর মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কাছিমটির গলা ও একটি পা ছিল গুরুতর জখমপ্রাপ্ত। এটি জালে আটকে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে চলতি মাসে রিডলি জাতের চারটি মা কাছিমের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।”
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত মাত্র দশটি রিডলি কাছিম কক্সবাজার সৈকতে সফলভাবে ডিম পেড়ে সাগরে ফিরেছে। এগুলোর মধ্যে পেঁচার দ্বীপ সৈকতে ৫টি, টেকনাফের শিলখালী সৈকতে ৩টি এবং সোনাদিয়া দ্বীপে ২টি। আর গত মৌসুমে ডিম পাড়ে ৪৯টি রিডলি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের একদল শিক্ষার্থী দুবলার চরে শিক্ষা সফরে গিয়ে একটি হক্সবিল টার্টল বা ভুত কাছিমের গলিত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তাছাড়া গত ১৪ জানুয়ারি বোরি’র বিজ্ঞানীরা সেন্টমার্টিন সৈকতে গিয়ে একটি মৃত হক্সবিল টার্টলের দেখা পান। এই কাছিমটি ৫ বছর পর দেখা পাওয়া গিয়েছিল।
একটি স্বাস্থ্যকর সমুদ্রের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসাবে বিবেচিত সামুদ্রিক কচ্ছপ। তারা সমুদ্রের পচা-গলা বস্তু খেয়ে দূষণ হতে সমুদ্রকে রক্ষা করে। এটি পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বা ‘কী-স্টোন প্রজাতি’ হিসাবেও বিবেচিত। পরিবেশে এই ধরনের প্রজাতির বেঁচে থাকার ওপর নির্ভর করে আরো বহু প্রজাতির প্রাণীর অস্তিত্ব।












